April 25, 2024, 6:58 am


সামি

Published:
2020-03-25 20:59:33 BdST

খালেদার জামিন; উদ্বিগ্ন তারেক, ঘুম হারাম নেতাদের


বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির বিষয়টি বিএনপির জন্য ছিল আচমকা দমকা বাতাসের মতো। বিএনপির কোনো নেতাই আনুষ্ঠানিক এই মুক্তির ঘোষণাটির বিষয়ে আগে থেকে কিছু জানতেন না। সরকারের পক্ষ থেকে যেমন বিএনপির নেতাদের কিছু জানানো হয়নি, তেমনি ঠিক একইভাবে বেগম জিয়ার পরিবারও বিএনপির নেতাদের বেকুব বানিয়েছে। এমনকি লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়া বেগম খারেদা জিয়ার বিষয়টি ঘুর্ণাক্ষরেও জানতে পারেননি।

বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির মুক্তির বিষয়টি প্রথম টেলিফোন করে তারেক জিয়াকে জানান বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। এই খবরটা পেয়ে উৎকণ্ঠিত তারেক জিয়া জিজ্ঞেস করেন, ‘কীভাবে সম্ভব? কে করলো?’

সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে যে, সরকার এ ব্যাপারে কঠোর গোপনীয়তা আরোপ করেছেন এবং বেগম জিয়ার পরিবারের কাছে এরকম অনেক তথ্য ছিল যে তারেক জিয়াসহ বিএনপির অনেক নেতাই বেগম জিয়ার মুক্তি চান না। তাই খালেদা জিয়া যাতে মুক্ত না হন, সেজন্য তারা নানারকম কূটকৌশল করতে পারে। এমনও হতে পারে যে, বেগম জিয়া মুক্তি পাচ্ছেন এই খবর শুনে বিএনপি হুট করেই এমন সব কর্মসূচি দিতো যাতে সরকারকে হয়ত তার অবস্থান থেকে সরে আসতে হতো।

আর এ কারণেই বেগম জিয়ার মুক্তির বিষয়টি গোপন করা হয়েছে। এই সময় বেগম জিয়ার মুক্তি নিয়ে সরকারের সঙ্গে বেগম জিয়ার পরিবার বিশেষ করে তার ছোট ভাই শামীম ইস্কান্দার এবং বোন সেলিনা ইসলামের সঙ্গে যে আলাপ আলোচনা হয়েছিল, সেই আলাপ আলোচনায় বিএনপিকে আড়াল করা হয়েছিল। কারণ বেগম জিয়ার পক্ষ থেকেই সরকারের কাছে অনুরোধ করা হয়েছিল যেন বিএনপির নেতৃবৃন্দ যেন এ ব্যাপারে কিছু না জানে।

শামীম ইস্কান্দার এবং বোন সেলিনা ইসলামের কাছে সুনির্দিষ্ট তথ্য ছিল যে, বেগম জিয়ার মুক্তিকে বাধাগ্রস্থ করার জন্য বিএনপি নেতৃবৃন্দ এবং লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়া নানা কূটকৌশল করতে পারে। এমনও হতে পারতো, করোনার সময়ও বিএনপি হটকারী কিছু কর্মসূচী দিয়ে খালেদা জিয়ার মুক্তির পথ বন্ধ করে দিতো।

বেগম জিয়ার পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, তাদের কাছে এমন তথ্য আছে যে বিভিন্ন সময় তারা যে খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য উদ্বোগ নিয়েছিল তা ভেস্তে গেছে বিএনপি নেতৃবৃন্দর হটকারী রাজনৈতিক কর্মসূচীর কারণে। যেমন বেগম জিয়াকে গতবছর নির্বাচনের আগেই মুক্তির প্রক্রিয়া শুরু করা হয়েছিল কিন্তু সেই সময় তারেক এবং মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের যৌথ তৎপরতার কারণে সেই উদ্যোগ ভেস্তে গিয়েছিল। এজন্য বেগম জিয়ার পরিবারের পক্ষ থেকে গোপনীয়তা রক্ষা করা হয়েছিল।

এখন নেতারা উদ্বিগ্ন, কারণ যারা বেগম জিয়ার মুক্তি বাধাগ্রস্থ করার জন্য কাজ করেছিলেন এদের সকলের নামই তার পরিবারের পক্ষ থেকে খালেদা জিয়াকে জানানো হয়েছে। এদের কপালেও দুর্ভোগ নেমে আসতে পারে বলে বিএনপির একাধিক নেতা মনে করছেন। সেজন্য বিএনপির নেতাকর্মীরা এখন আতঙ্কিত অবস্থায় রয়েছেন।

বিএনপির একজন নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেছেন, ওয়ান ইলেভেনে শেখ হাসিনা মুক্তির পর তিনি যেমন জেনেছিলেন ঠিক কারা তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করেছেন। ঠিক তেমনি খালেদা জিয়া মুক্তি পাওয়ার পর তার নিজ বাসভবনে গিয়ে জানতে পারবেন বিএনপির কোন কোন নেতা্রা তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করেছিলেন এবং তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে নূন্যতম কুন্ঠাবোধ করবেন না বেগম জিয়া, এটা সকলেই জানেন্। কারণ রাজনীতিতে বেগম জিয়ার প্রতিহিংসা খুব প্রিয় একটা বিষয়।

বেগম জিয়ার মুক্তির পরে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হলেন তারেক জিয়া। তিনি এখন থেকে আর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান থাকবেন না। বিএনপিতে যে তার একচ্ছত্র কর্তৃত্ব, তার অবসান ঘটলো।

বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তিতে বিএনপির রাজনীতি এখন কোনপথে যায় সেটাই দেখার বিষয়।

Unauthorized use or reproduction of The Finance Today content for commercial purposes is strictly prohibited.


Popular Article from FT বাংলা