01/14/2025
বিশেষ প্রতিবেদক | Published: 2024-05-22 04:28:22
গত সোমবার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদের বিরুদ্ধে স্যাংশন দিয়েছে। পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার এক বিবৃতির মাধ্যমে এই নিষেধাজ্ঞার কথা আনুষ্ঠানিক ভাবে ঘোষণা করেন। এই নিষেধাজ্ঞার পর জেনারেল আজিজ আহমেদ তাঁর বিরুদ্ধে সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
তিনি বলেছেন যে, তিনি বিজিপির মহাপরিচালক থাকা অবস্থায় বা সেনাপ্রধান থাকা অবস্থায় তার ভাইদেরকে ব্যবসা পাইয়ে দেওয়ার জন্য কোনরকম অবৈধ কর্মতৎপরতা করেননি। এই বিষয়টি তিনি চ্যালেঞ্জ করেছেন।
তবে, ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ আজিজ আহমেদের এই বিষয়ে তাদের অবস্থান সুস্পষ্ট করেছে। সরকার আজিজ আহমেদ বা অন্য কোন দুর্নীতিবাজদের দুর্নীতির বিরুদ্ধে অভিযুক্তদের দায় নেবে না।
আজ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির এক অনুষ্ঠানে সুস্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছেন যে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আজিজ আহমেদের বিষয়টি তাদেরকে আগে থেকেই অবহিত করেছিল। সরকার বিষয়টি জানতো এবং সরকারের এই ব্যাপারে যে কোনও অবস্থান নেই তাও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে সুস্পষ্ট করে দেওয়া হয়েছিল।
একইভাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান আজ সাংবাদিকদের বলেছেন যে, আজিজ আহমেদের বিষয়টি ব্যক্তিগত। এটির সাথে সরকার বা রাষ্ট্রের কোন সম্পর্ক নেই।
এর ফলে সুস্পষ্টভাবে এটাই প্রতীয়মান হচ্ছে যে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের যে সিদ্ধান্ত, সেই সিদ্ধান্ত গ্রহণের আগে তারা বর্তমান সরকারের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করেই গ্রহণ করেছে এবং এ ব্যাপারে সরকারের পক্ষ থেকে সবুজ সংকেত দেওয়া হয়েছে।
শুধুমাত্র আজিজ আহমেদ নয়, যারা চিহ্নিত দুর্নীতিবাজ, বিদেশে যাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অনুসন্ধান চলছে বা দেশে দুর্নীতি দমন কমিশন যাদের বিরুদ্ধে তদন্ত করছে তাদের ব্যাপারে সরকার এখন নির্লিপ্ত থাকবে। এসব ব্যাপারে সরকার কোনও পক্ষপাতিত্ব করবে না বা সরকার এই সমস্ত অভিযুক্তদের কোনও দায় দায়িত্ব গ্রহণ করবে না।
সাম্প্রতিক সময়ে সাবেক পুলিশ প্রধান বেনজীর আহমেদের বিরুদ্ধেও বিপুল পরিমাণ দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। বেনজীর আহমেদ ইতোমধ্যেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার আওতায় আছেন।
র্যাবের মহাপরিচালক থাকা অবস্থায় একটি বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের কারণে ২০২১ সালে তার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়। এই নিষেধাজ্ঞা মাথায় নিয়ে তিনি জাতিসংঘে একটি পুলিশ সম্মেলনে যোগদান করেছেন। বর্তমানে তিনি অবসর জীবনযাপন করছেন। সাম্প্রতিক সময়ে তার বিরুদ্ধে ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগ গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। যদিও সেই অভিযোগের বিরুদ্ধে তিনি আত্মপক্ষ সমর্থনের সুরে কিছু বক্তব্য উপস্থাপন করেছেন। কিন্তু সেই সমস্ত বক্তব্য কোনোটাই তার দুর্নীতিকে খাটো করে না। বরং এই সমস্ত বক্তব্যের মাধ্যমে এক ধরনের কৈফত এবং স্বীকৃতি রয়েছে বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন।
এ রকম একটি বাস্তবতায় আদালতের নির্দেশে দুর্নীতি দমন কমিশন বেনজীর আহমেদের বিরুদ্ধেও এখন তদন্ত করছে। এই তদন্ত যেন নিরপেক্ষ এবং নির্মমভাবে হয়। সে ব্যাপারেও সরকারের উচ্চ পর্যায় থেকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে বলে জানা যাচ্ছে।
সরকারের দায়িত্বশীল সূত্র বলছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এখন দুর্নীতির ব্যাপারে একেবারেই শুন্য সহিষ্ণু নীতিতে অবস্থান করছেন। দেশে-বিদেশে যারা দুর্নীতি করবে তাদের যদি আইনানুযায়ী বিচার করা হয়, সেসব বিচারে সরকার হস্তক্ষেপ করবে না এবং এটাতে সরকারেরও কোন দায়-দায়িত্ব নেই।
বিভিন্ন সূত্রগুলো বলছে যে, আজিজ আহমেদ বা বেনজির আহমেদের মত যে সমস্ত ব্যক্তিরা দুর্নীতির অভিযোগে অভিযুক্ত, যাদের বিদেশে সম্পদ আছে এই বিষয় গুলো সরকারও তার নিজস্ব উদ্যোগে তদন্ত করে দেখছে। এবং সরকারের নীতিনির্ধারকদের অনেকেই মনে করেন, যে অভিযোগ গুলো তোলা হয়েছে এবং যে সমস্ত অভিযোগে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে, তা পুরোপুরি ভাবে মিথ্যা নয়। সরকার এই দায়-দায়িত্ব নিয়ে বিতর্কিত হতে চায় না।
Editor & Publisher : Md. Motiur Rahman
Pritam-Zaman Tower, Level 03, Suite No: 401/A, 37/2 Bir Protik Gazi Dastagir Road, Purana Palton, Dhaka-1000
Cell : (+88) 01706 666 716, (+88) 01711 145 898, Phone: +88 02-41051180-81