09/20/2024
নেহাল আহমেদ | Published: 2024-07-14 12:55:21
একজন মুক্তিযোদ্ধার পক্ষে রাজাকার হওয়া সহজ, একজন রাজাকার কখনো মুক্তিযোদ্ধা হতে পারে না। মহান মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতার দীর্ঘ ৫১ বছর পেরিয়ে গেলেও শহীদ পরিবারের স্বীকৃতি পাইনি। কেউ আমাদের খবরও রাখেনি। পরিবার পরিজন নিয়ে অর্থাভাবে দিনাতিপাত করছি। শত বছর বয়সেও সরকারি কোনো সহযোগিতা পাইনি।
আক্ষেপের সঙ্গে কথাগুলো বলছিলেন নোয়াখালীর চাটখিল উপজেলার মোহাম্মদপুর ইউনিয়নের মোহাম্মদপুর গ্রামের শচীন্দ্র কুমার নাথ (৯৯)। (সূত্র দ্য ডেইলি স্টার)।
১৯৭০ সালের ৭ ডিসেম্বর পাকিস্তানে প্রথম সাধারণ যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় তাতে ফলাফলটি ছিল অবিশ্বাস্য- পূর্ব পাকিস্তানের ১৬২ আসনের মধ্যে বঙ্গবন্ধুর আওয়ামী লীগ বিপুল ভোটের ব্যবধানে ১৬০টি আসন পায়।
যুদ্ধের যতটুকু শুনেছি বা জেনেছি তাতে মনে হয়েছে মহান মুক্তিযুদ্ধে শতকরা ৯০ জন বাঙ্গালীই ছিলো স্বাধীনতার পক্ষে বাকি ১০ শতাংশ ছিলো পাকিস্থানের পক্ষে। যদি সত্যিই ৯০ ভাগ মানুষ পাকিস্থানের বিপক্ষে থাকে তা হলে ৯০ ভাগ লোক স্বাধীনতার পক্ষের লোক বাকি ১০ ভাগ লোক বাংলাদেশের বিপক্ষে। এরাই রাজাকার, আলশামস সহ বিভিন্ন ব্যক্তি।
গত দু বছর ধরে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস জানতে গ্রামে গ্রামে ঘুরেছি। খুব তিক্ত অভিজ্ঞতার জন্ম হয়েছে। অনেক মুক্তিযোদ্ধা পরিবার অসহায় অসচ্ছল অবস্থায় দেখলেও কোন রাজাকার পরিবারকে অসচ্ছল অবস্থায় দেখিনি। অনেক মুক্তিযোদ্ধার পরিবার দুমুঠো ভাতের জন্য ভিক্ষা করছে। রিকশা চালালেও রাজাকারের অট্টালিকা বা রাস্তার নামকরণ হয়েছে। অনেক মুক্তিযোদ্ধা মাত্র একটা কাগজের অভাবে নিজের ত্যাগের স্বীকৃতি, সম্মানটুকু পাচ্ছেননা।
অথচ পত্র পত্রিকায় এসেছে যাদের বয়স স্বাধীনতার কম তারাও মুক্তিযোদ্ধা হয়েছে।
ত্রিশ লক্ষ মানুষ শহীদ হয়েছে, অগনিত মা বোন সম্ভ্রম হারিয়েছে। তাদের যথাযথা সম্মান করা হয়েছে কিনা জানি না। ত্রিশ লক্ষ শহীদ পরিবারকে যদি মুক্তিযোদ্ধার মর্যাদা না দেয়া হয়, সত্যিকারের মুক্তিযোদ্ধাদের যদি তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা না হয়, মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকার মধ্যে যদি ভুয়া মুক্তিযোদ্ধাদের বাদ দেয়া না হয় তা হলে কোন মুক্তিযোদ্ধাদের আমরা সম্মান জানাবো?
স্বাধীনতার ৫২ বছর পর আমরা অনেকেই পাকিস্থানের দালাল হয়েছি। আমেরিকার দালাল হয়েছি। ভারতের দালাল হয়েছি শুধু হতে পারিনি বাংলাদেশের দালাল।
স্বাধীনতার ৫২ বছর পর হঠাৎ কেন কোটা নিয়ে কথা উঠছে। রাজাকারের তালিকা তৈরি করলেই তো অনেকটা সমাধান হয়ে যায়। এসব প্রশ্ন অমিমাংসিত রেখে যদি আমরা মুক্তিযোদ্ধাদের কোটা নিয়ে সংগ্রাম করি তা হলে সমাধানের পথে আসা প্রায় অসম্ভব?
মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মান কি আমরা সত্যিই দিতে চাই। তা হলে শুধু মাত্র সরকারী চাকরীর ক্ষেত্রে কেন? জাতীয় সংসদে তাদের প্রতিনিধিত্ব নয় কেন? বিশেষ প্রনোদনা দিয়ে বিভিন্ন কর্মক্ষেত্রে তাদের অংশগ্রহণ নয় কেন?
আজ মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে নানা কটুক্তি করা হচ্ছে। যেটা খুবই অপ্রত্যাশিত।
আমার মনে হয় কোটা আন্দোলন এখন অনেক কিছুর সাথে জড়িয়ে যাচ্ছে। স্বাধীনতার ৫৩ বছর পরও শিক্ষিত অনেক ছেলে মেয়ে বিদেশে পাড়ি জমানোর জন্য লাইন ধরে আছে।
সরকারের সব সেক্টরে দুর্নীতি প্রাতিষ্ঠানিক রুপ পেয়েছে। ঘুষ, দুর্নীতি মহামারি রুপ নিয়েছে। রাজনীতিবিদদের মধ্যে ত্যাগের পরিবর্তে ভোগের প্রাধান্য লক্ষ করা যাচ্ছে। অদ্ভুত কোটা আন্দোলনের এই সমস্যা রাজনীতিবিদদেরকেই সমাধান করতে হবে।
Editor & Publisher : Md. Motiur Rahman
Pritam-Zaman Tower, Level 03, Suite No: 401/A, 37/2 Bir Protik Gazi Dastagir Road, Purana Palton, Dhaka-1000
Cell : (+88) 01706 666 716, (+88) 01711 145 898, Phone: +88 02-41051180-81