10/13/2024
শাফিন আহমেদ | Published: 2024-09-02 18:53:55
গত ১৮ জুলাই বাড্ডা-রামপুরা এলাকায় পুলিশের গুলিতে গুরুতর আহত হন মো. সেলিম তালুকদার। ১৩ দিন নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) থেকে গত ১ আগস্ট মারা যান তিনি।
গত বছর ৪ আগস্ট বিয়ে করেন সুমি আক্তারকে। সেলিম তালুকদারের মৃত্যুর তিনদিন পর কুলখানির আয়োজন করা হয়। সেদিনই ছিল তাদের প্রথম বিবাহবার্ষিকী।
পুলিশের গুলিতে আহত হওয়ার দুই সপ্তাহ আগেও অসুস্থ স্ত্রীকে নিয়ে ডাক্তারের কাছে গিয়েছিলেন। তখনো জানতেন না তিনি বাবা হতে যাচ্ছেন। কুলখানি অনুষ্ঠানের দিন সেলিমের স্ত্রী অসুস্থ হন। ৫ আগস্ট চিকিৎসকের শরণাপন্ন হলে জানা যায়, সুমি আক্তার চার সপ্তাহ ছয়দিনের অন্তঃসত্ত্বা। স্বামীর মৃত্যুর পাঁচদিনের মাথায় মা হওয়ার খবরে অপ্রকৃতিস্থ হয়ে পড়েন সুমি আক্তার।
দুই বছর হয় বিজিএমইএ ইউনিভার্সিটি অব ফ্যাশন অ্যান্ড টেকনোলজি থেকে পড়াশোনা শেষ করে সেলিম হাল ধরেন পরিবারের। কাজ করতেন নারায়ণগঞ্জের একটি গার্মেন্ট ফ্যাক্টরিতে সহকারী মার্চেন্ডাইজার পদে।
জানা গেছে, কর্মজীবনে ব্যস্ততার কারণে শুরুর দিকে আন্দোলনে অংশ না নিলেও শিক্ষার্থীদের ডাকা শাটডাউন কর্মসূচি থেকে তিনি স্বতঃস্ফূর্তভাবে আন্দোলনে অংশ নেন। পরিবার ও বন্ধুদের তথ্য মতে, ১৮ জুলাই বেলা ১১টার দিকে তিনি ফেসবুকে একের পর এক সহিংসতার ভিডিও প্রকাশ করতে থাকেন।
সেলিমের বোন জামাই মেহেদী হাসান হৃদয়ের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ১৮ জুলাই খুব সকালে সেলিম তার ইউনিভার্সিটির পুরনো আইডি কার্ডটি বের করেন। তার মা জিজ্ঞাসা করলে তেমন কিছু বলেননি। পরে মা বুঝতে পারেন তিনি আন্দোলনে যাচ্ছেন।
স্ত্রী অসুস্থ থাকায় সেলিমকে সেখানে যেতে নিষেধ করেন মা। উত্তরে সেলিম বলেন, ‘মানুষের ছেলেরা শহীদ হচ্ছে, তোমার ছেলে আঁচলে বাঁইধা রাখবা নাকি! দেখছো রংপুরের ছেলেটা ক্যামনে বুক আগাই দিয়া শহীদ হইছে, দোয়া করো যেন শহীদ হই।’”
এই কথা শুনেই কান্নায় ভেঙে পড়েন মা সেলিনা বেগম। সদ্যবিবাহিত অসুস্থ স্ত্রীকে মায়ের কাছে রেখেই চলে যান আন্দোলনে।
ওইদিন বেলা ১টার দিকে সেলিমের ফোন থেকে অপরিচিত একজন ফোন করে জানান, সেলিম গুলিবিদ্ধ এবং ফরাজি হাসপাতালে নেয়া হয়েছে। তার পর থেকে বন্ধ পাওয়া যায় ফোন।
দিশেহারা মা ও তার ছোট বোন পাগলের মতো ছুটে যান হাসপাতালে। সেখানে গিয়ে না পেয়ে ছুটে যান মুগদা মেডিকেলে। দেখতে পান গুলিবিদ্ধ অবস্থায় বেডে কাতরাচ্ছে সেলিম। ছররা গুলিতে ঝাঁজরা হয়ে আছে তার শরীর ও মাথা। গুরুতর অবস্থায় আইসিইউতে লাইফ সাপোর্টে নেয়া হয় তাকে। অবস্থার আরো অবনতি হলে ধানমন্ডি পপুলার হাসপাতালের আইসিইউতে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়। ১৩ দিন লাইফ সাপোর্টে থাকা অবস্থায় ১লা আগস্ট মারা যান সেলিম।
Editor & Publisher : Md. Motiur Rahman
Pritam-Zaman Tower, Level 03, Suite No: 401/A, 37/2 Bir Protik Gazi Dastagir Road, Purana Palton, Dhaka-1000
Cell : (+88) 01706 666 716, (+88) 01711 145 898, Phone: +88 02-41051180-81