12/08/2024
আবু তাহের বাপ্পা | Published: 2024-10-30 10:27:54
কর ফাঁকিতে সিদ্ধহস্ত মহাদূর্নীতিগ্রস্থ শরিফ জহিরকে ইউসিবিএল ব্যাংকের চেয়ারম্যান করা হয়েছে। তিনি ছিলেন পতিত সরকারের একজন দোসর। কিভাবে কেন কার স্বার্থে শরিফ জহির এপদে নিয়োগ পেলেন তা নিয়ে ব্যাংকপাড়ায় সমালোচনার ঝড় উঠেছে। আওয়ামীলীগ সরকারের সাথে শরিফ জহিরের ছিলো সু-সম্পর্ক। তিনি পতিত সরকারের আমলে এমন কোন অপকর্ম নেই যে করেননি। গত ৫ আগস্ট বিপ্লবের পর রাতারাতি রঙ পরিবর্তন করে ফেলেন শরিফ জহির।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে হাস্যজ্জ্বল ছবি তুলে সব ধরনের সুযোগ সুবিধা ভোগ করতেন এবং জানান দিতেন তিনি আওয়ামীলীগের লোক ।
শরিফ জহিরের অসংখ্য দূর্নীতির ভিতর তথ্য প্রমান রয়েছে। ২০২২ সালের ৬ জুলাই চট্টগ্রাম কাস্টমস থেকে শুল্কায়ন না করে খালাস করা রোলস-রয়েস ব্র্যান্ডের একটি বিলাসবহুল গাড়ি ঢাকার বারিধারা থেকে জব্দ করে শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা। যুক্তরাজ্য থেকে আমদানি করা এই গাড়িটির দাম ২৭ কোটি টাকা।
বিভিন্ন মিডিয়ার সংবাদ বিশ্লেষণ ও প্রাপ্ত নথি থেকে জানা যায়, কোনো পণ্যই শুল্কায়ন কার্যক্রম সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত বন্দর বা শুল্ক স্টেশন থেকে বের হওয়ার সুযোগ নেই। ৭০ দিন আগে গাড়িটি আমদানি কারা হলেও আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান অজানা কারণে শুল্কায়ন করেনি। গাড়িটি কীভাবে চট্টগ্রাম বন্দর থেকে সিইপিজেড এবং সেখান থেকে ঢাকায় এসেছে তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। শুল্কসহ গাড়িটির দাম ২৭ কোটি টাকা।
কাস্টমসের নথি অনুযায়ী, গত ১৭ মে গাড়িটি যুক্তরাজ্যের ভারটেক্স অটো লিমিটেড থেকে আমদানি করে বাংলাদেশের অনন্ত গ্রুপ ও চীনা নাগরিকের যৌথ মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান জেড এন্ড জেড ইন্টিমেটস লিমিটেড। আমদানি নথিতে ৬৭৫০ সিসির গাড়িটির দাম দেখানো হয়েছিলো ২ লাখ ডলার।
যৌথ মূলধন কোম্পানি ও ফার্মসমূহের পরিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, জেড অ্যান্ড জেড ইনটিমেটস লিমিটেডের ৯০ শতাংশ শেয়ার শরিফ জহিরের নেতৃত্বে অনন্ত গ্রুপের । বাকি ১০ শতাংশ শেয়ার হংকংভিত্তিক ব্রিলিয়ান ওশেন ট্রেডিং লিমিটেডের।
এছারাও আরো একটি নথি বিশ্লেষণ করে জানা যায়, ২০১৯ সালের ২১ শে মে ইউসিবিএল ব্যাংকের শরিফ জহিরের অনন্ত গ্রুপের সহযোগী প্রতিষ্ঠান অনন্ত ডেনিম টেকনোলজি লিমিটেড ৫২৫৩ মেট্রিক টন কাঁচামাল অবৈধভাবে খোলাবাজারে অপসারণ করতে গিয়ে হাতেনাতে ধরা খায় চট্টগ্রাম কাস্টমস বন্ড কমিশনারেট এর প্রিভেন্টিভ টীমের কাছে।
শুল্কমুক্ত সুবিধার কাপড় বন্দর থেকে খালাস হয়েছিলো ৯ মার্চ ২০১৯। সেই কাপড়ের গন্তব্য ছিলো নারায়ণগঞ্জের আদমজী ইপিজেড। কিন্তু বন্দর থেকে খালাস করে সেই কাপড় নেয়া হয়েছে চট্টগ্রামের একটি গুদামে। আমদানি করা সেই ৬৯১ রোল কাপড় গুদাম থেকে তোলা হয় তিনটি কাভার্ড ভ্যানে। উদ্দেশ্য ছিলো অবৈধভাবে অপসারণ করে খোলা বাজারে বিক্রি। বিধিবাম, ট্রাকসহ ধরা পড়ে যায় প্রিভেন্টিভ টীমের কাছে।
অনুসন্ধানে জানা যায়, মহাদূর্নীতিবাজ সাবেক মূখ্য সচিব আহমদ কায়কাউসের অত্যন্ত ঘনিষ্ট ছিলো শরিফ জহির। বিগত আওয়ামীলীগ সরকারের সময় বিদ্যুৎ বিভাগ থেকে লাখ লাখ কোটি টাকা লোপাটের অভিযোগ রয়েছে এই কায়কাউসের বিরুদ্ধে। প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের দোহাই দিয়ে বড় বড় সিন্ডিকেট ম্যানেজ করতেন তিনি। এই কায়কাউসের মাধ্যমেই শরিফ জহির ১০ কোটি টাকা দিয়ে এনবিআর থেকে তার ফাইলগুলো ক্লোজ করিয়ে ফেলেন। অভিযোগ রয়েছে, এজন্য ৫ কোটি টাকা নেন কায়কাউস আর বাকী ৫ কোটি টাকা দেয়া হয়েছিলো এনবিআর চেয়ারম্যানকে। এভাবেই শরিফ জহির সিদ্ধ হস্তে তার অনিয়ম দূর্নীতি মাটিচাপা দিয়েছেন।
ব্যাংকপাড়ায় গুঞ্জন রয়েছে, এমন দূর্নীতিবাজের হাতে কি ইউসিবিএল ব্যংক নিরাপদ থাকবে? বাংলাদেশ ব্যাংক কিভাবে এমন একজন দূর্নীতিবাজকে একটা ব্যাংকের চেয়ারম্যান করে? এ নিয়েও জনমনে রয়েছে নানা প্রশ্ন।
বিষয় টি অন্তবর্তী সরকারের অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহ আহমদ এর দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন বিজ্ঞমহল।
Editor & Publisher : Md. Motiur Rahman
Pritam-Zaman Tower, Level 03, Suite No: 401/A, 37/2 Bir Protik Gazi Dastagir Road, Purana Palton, Dhaka-1000
Cell : (+88) 01706 666 716, (+88) 01711 145 898, Phone: +88 02-41051180-81