29520

09/20/2025

দালাল ধরে গিয়েছিলেন ইরাকে, ময়লার ভাগাড়ে তিন টুকরায় মিলল লাশ

নিজস্ব প্রতিবেদক | Published: 2025-09-20 18:33:11

দালালের হাত ধরে ইরাকে গিয়েছিলেন আজাদ খান (৪৭)। কিন্তু, তিন মাস না যেতেই খবর এলো পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তিটি আর নেই। নৃশংসভাবে হত্যা করে তার মরদেহটি ময়লার ভাগাড়ে ফেলে গেছে কে বা কারা।  

নিহত আজাদ খান রাজবাড়ি গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়া ইউনিয়নের ৬ নং ওয়ার্ডের হোসেন মন্ডল পাড়া গ্রামের ইয়াজ উদ্দিনের ছেলে।

পরিবার সূত্রে জানা গেছে, তিন মাস আগে ধার দেনা করে দালালের মাধ্যমে ইরাক যান আজাদ। এক সপ্তাহ আগে ইরাকের বাগদাদ শহর থেকে নিখোঁজ হন তিনি। সবশেষ বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) রাতে লিটন নামে অপর এক ইরাক প্রবাসী ফোন করে আজাদের পরিবারকে জানান, তাকে তিন টুকরো করে লাশ বস্তায় ভরে ময়লার ভাগারে ফেলে রাখা হয়েছে।

শহরের পরিচ্ছন্নতা কর্মীরা ময়লা পরিষ্কার করতে গিয়ে লাশের দুর্গন্ধ পায়। এ সময় তারা বস্তার মুখ খুলে দেখে মানুষের লাশ। তখন তারা পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ গিয়ে লাশ তাদের হেফাজতে নেয়।

আজাদের স্ত্রী ময়না বেগম বলেন, স্বামীকে বিদেশ পাঠিয়ে আমাদের পরিবার একদম নিঃস্ব হয়ে গেছে। অনেক ধারদেনা করে আমার স্বামীকে স্থানীয় বাবুলের মাধ্যমে তিন মাস আগে ইরাকে পাঠাই। তাকে যে কাজ দেওয়ার কথা ছিল, বাবুল তাকে সেই কাজ না দিয়ে অন্য একটি কাজ দেয়। আমার স্বামী বাবুলের সাথে বারবার যোগাযোগের চেষ্টা করে। কিন্তু বাবুল তার কোনো ফোন ধরেনি। বাবুল ফোন ধরলে হয়তো আজ আমার স্বামীর এই করুণ পরিণতি হতো না। আমি আমার স্বামীর হত্যার বিচার চাই।

এই বিষয়ে ইরাক থেকে মুঠোফোনে বাবুল জানান, আমি ওকে যেখানে দিয়েছিলাম সেখান থেকে কুমিল্লার সোহাগ নামে একটি ছেলে তাকে অন্য জায়গায় একটি দোকানে নিয়ে কাজে দেয়। সেই দোকানের মালিক (কফিল) আজাদকে তার বাড়িতে নিয়ে গিয়ে কয়েকদিন ধরে বাড়িঘরের ময়লা ও আশপাশ পরিষ্কার করায়। এর মধ্যে আমি সোহাগকে ফোন করে আজাদের খবর জানতে চাই। সোহাগ আমাকে জানায়, আজাদ কফিলের বাসায় আছে। আজ শুনতে পাচ্ছি আজাদকে হত্যা করে লাশ তিন টুকরো করে ফেলা হয়েছে। আমরা ইরাকের বাংলাদেশ অ্যাম্বাসিতে বিচার দিয়েছি। অ্যাম্বাসির লোকজনসহ আমরা সেখানে যাচ্ছি। আজাদের লাশ বাগদাদের একটি মর্গে রাখা হয়েছে।

নিহত আজাদের শ্যালক জহরুল হক বাপ্পি এই প্রতিবেদককে মোবাইলে বলেন, আজাদ আমার চাচাতো বোনের স্বামী। আমি ইরাকে বাংলাদেশ দূতাবাসের সচিবের সাথে কথা বলেছি। তাকে জানিয়েছি যে, আজাদকে নৃশংসভাবে হত্যা করে কয়েক টুকরা করে ময়লার ভাগাড়ে ফেলে রাখা হয়েছে। আমরা এই হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্ত ও অপরাধীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।

তিনি আমাকে জানিয়েছেন যে, আজাদের মরদেহ উদ্ধার করে ইরাকের একটি হাসপাতালের মর্গে রাখা আছে। এই বিষয়ে তদন্ত চলমান আছে। আগামী রোববার হত্যাকাণ্ডে অভিযুক্ত কফিলকে কাজুমিয়া আদালতে তোলা হবে।

এই বিষয়ে গোয়ালন্দের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. নাহিদুর রহমান বলেন, এই বিষয়টি আমি শুনেছি। আগামীকাল সরেজমিনে গিয়ে বিস্তারিত খোঁজ খবর নেবো।


Editor & Publisher : Md. Motiur Rahman

Pritam-Zaman Tower, Level 03, Suite No: 401/A, 37/2 Bir Protik Gazi Dastagir Road, Purana Palton, Dhaka-1000
Cell : (+88) 01706 666 716, (+88) 01711 145 898, Phone: +88 02-41051180-81