30476

12/14/2025

গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রনালয়ের উপদেষ্টার ব্যক্তিগত কর্মকর্তা সোহেলের শত কোটি টাকার সম্পদের উৎস কী?

অনুসন্ধানী রিপোর্ট | Published: 2025-12-14 00:27:31

জুলাইয়ের গণঅভ্যুত্থানকে প্রশ্নবিদ্ধ করছেন গণপূর্ত ও গৃহায়ণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আদিলুর রহমানের ব্যক্তিগত কর্মকর্তা সোহেল মিয়া। রিকশা চালক ফজলুল হকের ছেলে সোহেল আজ শত কোটি টাকার মালিক। নামে বেনামে রয়েছে সোহেলের কোটি কোটি টাকার সম্পদ। এসব কিভাবে সম্ভব হয়েছে? চাকুরীর বয়স তো মাত্র ৬ বছর। সোহেল মিয়াকে নিয়ে প্রশ্নের ডালপালা গজিয়েছে মন্ত্রণালয়, গণপূর্ত অধিদপ্তর, রাজউক, জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষসহ মন্ত্রণালয়ের সব শাখা প্রশাখায়।

গণঅভ্যুত্থানের পর ব্যাপক রদবদল, পদোন্নতি, বদলি, টেন্ডারবাজি, প্লট, জমি ও বাড়ি দখলের ক্ষেত্রে একটি সিন্ডিকেট গড়ে তোলে সোহেল মিয়া। বিজ্ঞ মহল মনে করছে, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের ছত্রছায়ায় এসব কাজ করছে সোহেল। একজন রিকশাচালকের ছেলে হয়ে সোহেলের অবৈধভাবে অর্থ উপার্জনের উৎস কি? কারা তার সঙ্গে জড়িত?

ঢাকা থেকে টাঙ্গাইল পর্যন্ত সোহেলের নামে বেনামী অবৈধ সম্পদসহ শিক্ষাজীবন ও দুর্নীতির মাধ্যমে ভুয়া সনদে চাকরি পাওয়া সংক্রান্ত বিষয়ে দীর্ঘদিন ‘দ্য ফিন্যান্স টুডে’ অনুসন্ধান চালিয়েছে। তাতে ভয়ংকর অনেক তথ্য খুঁজে পেয়েছে অনুসন্ধানী টিম। তারই আলোকে সোহেল মিয়ার প্রকৃত অপকর্ম ও দুর্নীতির চিত্র তুলে ধরা হয়েছে আজকের এই প্রতিবেদনে।

অপকর্মের কিছু খন্ডচিত্র

গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় সোহেল মিয়ার দুর্নীতির চিত্র ভয়ংকর। অত্যন্ত কৌশলী ও চতুর সোহেল মিয়া তার দুর্নীতি করে অর্জিত অর্থের একটা বড় অংশ জুড়ে রেখেছেন নিজের বাবা ও তার আত্মীয়-স্বজনদের নামে।

জানা যায়, এই সোহেল মিয়া ১৫ জুলাই ২০২৪ তারিখে জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষ হতে মিরপুর-১৬ নং সেকশনের ১৩৫৮ বর্গফুটের ২-১/ সি নম্বর ফ্ল্যাটটি সংরক্ষিত প্রতিমন্ত্রী কোটায় তার রিকশাচালক বাবা মোঃ ফজলুল হকের নামে বাগিয়ে নেয়। গত ১৫-১০-২০২৫ তারিখে সোহেলের বাবার নামে ১৫০০ সিসির জাপানি টয়োটা ব্র্যান্ডের সাদা প্রাইভেট কার ক্রয় করে নিজের ব্যক্তিগত চলাফেরার জন্য। এই গাড়িটির রেজিস্ট্রেশন নম্বর ঢাকা মেট্রো ঘ-২৯-১৩৬৫।

সোহেলের কাছের অনেকে বলেছেন, তার ভাণ্ডারে রয়েছে আরো একটি দামী ব্রান্ডের বিলাসবহুল গাড়ি। সোহেলের গ্রামের বাড়ি টাঙ্গাইল জেলার কালিহাতি পৌরসভায়।

প্রাথমিক অনুসন্ধানে জানা গেছে, সোহেল মিয়া ২০১৮ সালে চাকরি পাওয়ার পর মাত্র এক বছরের মাথায় কালিহাতী পৌরসভা থেকে ২৯/৯/২০১৯ তারিখে মেসার্স নেক্সাস এন্টারপ্রাইজ নামে প্রথম শ্রেণীর ঠিকাদারের ট্রেড লাইসেন্স নেন যার প্রোপাইটার তার বাবা ফজলুল হক। তার ট্রেড লাইসেন্স নাম্বার ০০৭৫১, লাইসেন্স আইডি ০৫-০০৫-০০৭৫১। সোহেলের বাবা ফজলুল হকের টিন নম্বর ৮৫২৮৫২৬২১৪৮৫, মেসার্স নেক্সাস এন্টারপ্রাইজের বিন নাম্বার ০০২২৩৪৯০৪-০৪০৬।

এই লাইসেন্সের সূত্র ধরে জানা যায়, গত ৬/১০/২০১৯ তারিখে কালিহাতির একটি বেসরকারি ব্যাংকে নেক্সাস এন্টারপ্রাইজের নামে একটি একাউন্ট খোলা হয় যার অ্যাকাউন্ট নম্বর ৪০৬০১১১০০০০০২৬৮। যেই একাউন্টে ১৬-২-২০২০ তারিখে সর্বশেষ ব্যালেন্স পাওয়া যায় ১০, ৪৯, ৫২৪ (দশ লক্ষ উনপঞ্চাশ হাজার পাঁচশত চব্বিশ) টাকা।

এক বিশেষ অনুসন্ধনে জানা যায়, পূর্বে কোন ঠিকাদারি কাজ করার অভিজ্ঞতা না থাকার পরও গত ৩ই ফেব্রুয়ারি ২০২১ তারিখে মেসার্স নেক্সাস এন্টারপ্রাইজকে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রথম শ্রেণীর ঠিকাদার হিসেবে তালিকাভুক্ত করা হয়েছে।

বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে, তৎকালীন প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদের প্রভাব খাটিয়ে সোহেল মিয়া তার বাবার নামে অবৈধভাবে এই লাইসেন্সে করিয়ে নেয়।

সম্প্রতি কালিহাতি পৌরসভা এলাকায় খোঁজ নিয়ে দেখা যায়, হাসপাতাল রোডে সোনালী ব্যাংকের পাশে রাস্তার মোড়ে সোহেলের বাবার নামে ৬ শতাংশ জমি ক্রয় করা হয়েছে যার প্রতি শতাংশের বর্তমান বাজারমূল্য ৩০,০০০,০০ (ত্রিশ লক্ষ) টাকা। সেখানে ইতিমধ্যে মার্কেট নির্মানের কাজ শুরু হয়েছে। সেই হিসেবে ৬ শতাংশ জমির বর্তমান মূল্য ১,৮০,০০,০০০০ (এক কোটি আশি লক্ষ) টাকা। স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা গেছে, মার্কেটের কাজে ০৯/১১/২০২৫ পর্যন্ত ২.৫০ কোটি (দুই কোটি পঞ্চাশ লক্ষ) টাকা খরচ হয়েছে।

কালিহাতি ঘুরে দেখা গেছে, ফকির বাড়ি রোডের মুখে ছোট ভাই আনোয়ারকে মোটা অংকের টাকা দিয়ে ট্রাভেল এজেন্সির ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে দিয়েছেন সোহেল মিয়া। ফকির বাড়ির রাস্তা দিয়ে ২০০ মিটারের মতো ঢুকলেই চোখে পড়বে একটি বিলাসবহুল বাড়ি। এই বাড়ির নেম প্লেটে লেখা রয়েছে ফজলুল হক ভিলা (হোল্ডিং-৩৮৫, রোড নং- ৫ সাতুটিয়া পূর্বপাড়া, কালিহাতী টাঙ্গাইল) যেটি সোহেল মিয়ার বাড়ি নামে পরিচিত। মোটা আস্তরের লম্বা দেয়ালে বড় লোহার গেটের সাথে লাগানো সিসি ক্যামেরা। অথচ কয়েক বছর আগেও এনজিও ঋণ প্রণোদনার ঘরে থাকতেন সোহেল মিয়ার পরিবার।

এলাকার লোকজন সোহেল মিয়াকে সচিব পদে বড় কর্মকর্তা বলেই জানে এবং তিনি প্রায় সপ্তাহেই দামী ব্রান্ডের গাড়ীতে করে এলাকায় আসেন। কয়েকজন প্রতিবেশীর সাথে কথা বলে জানা যায়, সোহেল চাকরি পাওয়ার পর তাদের ভাগ্য খুলে যায়। নামে বেনামে মাঠে কিনেছেন অনেক জমি। এছাড়া পৌরসভার ভিতরে আছে স্থাপনা করার মত আরও বেশ কয়েকটি কেনা জমি। তবে নিজের নামের চেয়ে বাবা, ভাই, শ্বশুর, সমন্ধি, বউয়ের নামেই করেছেন বেশিরভাগ সম্পত্তি।

কেস স্টাডি-১:

সোহেল মিয়া, পিতা-ফজলুল হক, টাঙ্গাইলের কালিহাতি উপজেলার সাতুটিয়া গ্রামের বাসিন্দা। রিক্সাচালক পিতার স্বল্প আয়ে অতিকষ্টে জীবনযাপন ও পড়ালেখা করে তিনি আজকের এই অবস্থানে এসেছেন। বাবা কখনও ভ্যান, রিক্সা ও অটো চালিয়ে সন্তানদের মানুষ করেছেন। সোহেল কালিহাতি আর এস পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ২০০৩ সালে এসএসসি, ২০০৬ সালে এইচএসসি ও ২০১০ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পলিটিক্যাল সাইন্সে অনার্স পাস করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়াশোনার পর তিনি ২০১৬ সালে জানুয়ারি-জুন সেশনে বাংলাদেশ টেকনিক্যাল এডুকেশন বোর্ড (টাঙ্গাইলের মাইটি এডুকেশন প্রতিষ্ঠান) এর দৃষ্টি কম্পিউটার প্রশিক্ষণ কেন্দ্র থেকে ৬ মাস মেয়াদী কম্পিউটার অফিস-অ্যাপ্লিকেশন কোর্স কমপ্লিট করেন। একই সময় তিনি বগুড়ার ইন্সটিটিউট অফ আইসিটি (এসআইটি ফাউন্ডেশনের অধীনে) ৬ মাস মেয়াদী ডিপ্লোমা-ইন-মাল্টিল্যাংগুয়াল সেক্রেটারিয়াল সায়েন্স কোর্সটি সম্পন্ন করেছেন।

'দ্য ফিন্যান্স টুডে'র বিশেষ অনুসন্ধানে এসআইটি ফাউন্ডেশনের অফিস রেজিস্টার সার্টিফিকেট অনুযায়ী সিরিয়াল নং বি-৫১৬, রেজিস্ট্রেশন নং - ঝওঞ-ঐছ-উঝ-৫১৬ নামে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। শুধু তাই নয়, ঝওঞ ফাউন্ডেশনের ইস্যুকৃত অন্যান্য সনদ এর স্বাক্ষরের সাথে সোহেলর সনদের স্বাক্ষরের কোনো মিল খুজে পাওয়া যায়নি।

এই ব্যাপারে ঝওঞ ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালকের কাছে জানতে চাইলে তিনি কোনো মন্তব্য না করে নীরবতা পালন করেন। শুধু তাই নয়, সার্টিফিকেট এর সেশন ০১-০১-২০১৬ থেকে ৩০-০৬-২০১৬ ইস্যু তারিখ ১০-৭-২০১৬ তারিখে সিল মারা। এই ব্যাপারে নির্বাহী পরিচালকের বক্তব্য হচ্ছে, যেহেতু সার্টিফিকেট হাতে লেখা, অতএব অন্যান্য কলাম ও হাতে লেখাও পূরণ করা হবে। আমরা হয় পুরোপুরি হাতে লেখা সার্টিফিকেট ইস্যু করি না হয় কম্পিউটারে পূরন করে ইস্যু করে থাকি। দ্বৈত লেখা কখনও দেওয়া হয় না। এমনকি স্বাক্ষরের গড়মিলের ব্যাপারেও তিনি উষ্মা প্রকাশ করেন।

অনুসন্ধানে দেখা যায়, একই সময়ে টাঙ্গাইল ও বগুড়া থেকে ৬ মাস মেয়াদী কোর্স সম্পন্ন করা হয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ২০১০ সেশনের পরীক্ষার্থী যিনি ২০১২ সালে অনার্স সম্পন্ন করে। আবার ২০১৬ সালে ডিপ্লোমা সনদ দিয়ে মুদ্রাক্ষারিক কম্পিউটার অপারেটর পদে চাকরি নেওয়া থেকেই অনুসন্ধান শুরু হয়েছে। শুধু তাই নয়, দৃষ্টি কম্পিউটার প্রশিক্ষণের উক্ত সময়ের ভর্তি রেজিস্টার এ ও সোহেল মিয়ার ভর্তি সংক্রান্ত কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। কিন্তু অনলাইনে বোর্ডের জায়গায় তার মার্কশিট পাওয়া গেছে। এই বিষয়টি রহস্যজনক। তাহলে কি ভুয়া সনদে তিনি নিম্মতম গ্রেডে চাকুরী নিয়েছে? এই রহস্য উদঘাটনে বিভাগীয় অনুসন্ধান ও তদন্ত প্রয়োজন।

কেস স্টাডি-২

১৩-৯-২০১৮ সালে সাঁট মুদ্রাক্ষরিত কাম কম্পিউটার অপারেটর পদে চাকরিতে যোগদান করেন সোহেল মিয়া। ০৬-৪-২০২৩ তারিখে সাঁট মুদ্রাক্ষরিক কাম কম্পিউটার অপারেটর পদ থেকে স্বারক নং ২৫.০০.০০০০.০৪৮.১৯.০০১.১৫ (অংশ+১) ৩০১ নম্বর অফিস আদেশে উপসচিব মনিরুজ্জামান এর স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে সোহেল মিয়াকে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর দপ্তরে সচিবের ব্যক্তিগত কর্মকতা (চলতি দায়িত্ব) হিসেবে পদায়ন করা হয়। এই পদায়নের ফলে সোহেল মিয়া হয়ে ওঠেন অপ্রতিরোধ্য।

এরপর ২৫/৯/২০২৪ইং তারিখে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খানের ব্যক্তিগত কর্মকর্তা পদে পদায়নের পর তিনি ধরাকে সরা জ্ঞান করে চলছে। এখান থেকেই শুরু হয় সোহেলের নতুন মিশন টেন্ডারবাজি, পদোন্নতি, বদলি, প্লট বরাদ্দ, ফ্ল্যাট বরাদ্দ বাতিলসহ বিভিন্ন কাজে দুর্নীতির পথযাত্রা। এসব অপকর্মের সুবিধার্থে মন্ত্রণালয়ে শক্তিশালী এক সিন্ডিকেট গড়ে তোলে সোহেল মিয়া। এই অভিযোগ ভুক্তভোগী একাধিক ব্যক্তির। গণপূর্ত ও গৃহায়ন মন্ত্রণালয়কে ঘিরে এই অশুভচক্র হাতিয়ে নিচ্ছে কোটি কোটি টাকা। বিশেষ করে টেন্ডার ,তদবির, গণপূর্ত অধিদপ্তরের, রাজউক গৃহায়নের সমস্ত বদলী বাণিজ্য প্লট, ফ্ল্যাট, বরাদ্দ টেন্ডারের ফাইল উপদেষ্টার দপ্তরে যেহেতু উপস্থাপনার  দায়িত্ব ব্যক্তিগত কর্মকর্তার, সেই সুবাদে চতুর এই সোহেল মিয়া হাতিয়ে নিচ্ছে অঢেল টাকা। বড় বড় টেন্ডার, প্রকল্প, আবাসন, দপ্তর ভবন, সড়ক সংযোগ এর কেন্দ্রবিন্দু এই মন্ত্রণালয়।

'ব্যক্তিগত কর্মকর্তা' একটি প্রশাসনিক গুরুত্বপূর্ণ পদ। তিনি সরাসরি উপদেষ্টার সাথে সম্পৃক্ত, নীতি নির্ধারণী মিটিং সিদ্ধান্ত অনুমোদন সবকিছুর সাথে তিনি অবগত থাকেন। এক্ষেত্রে তার প্রভাবটি অত্যন্ত ব্যাপক আর এই সুবাদে ঠিকাদার সুবিধাভোগী বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তাদের তাদের স্বার্থ হাসিলের গুটির দাবা হিসেবে সোহেল মিয়া ব্যবহৃত হয় বিনিময়ে তার পকেট হয় ভারী।

সোহেল মিয়ার অবৈধ সম্পদ

২০১৮ সালে সাট মুদ্রাক্ষরিক কাম কম্পিউটার অপারেটর পদে যোগদানকৃত সোহেল মিয়ার চাকরিতে বয়স সব মিলিয়ে সাত বছর। গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের ১৩ আগস্ট এর নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির এক প্রজ্ঞাপনে দেখা গেছে সাট মুদ্রাক্ষরিক কাম কম্পিউটার অপারেটরের বেতন স্কেল ১১০০০-২৬৫৯০/- (গড়ে ১৩) ২০১৮ সালে চাকুরীতে যোগদানের পরে ২০২৪ সালে উপদেষ্টার ব্যক্তিগত কর্মকতা হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত ১৩-৩-১৮ থেকে ২৫-৯-২৪ পর্যন্ত ছয় বছরে সর্বমোট ১,৯১,৪৪৮০ টাকা বেতন ভোগ করেছেন। আর বিগত ১ বছরে সর্বসাকুল্যে ৫ লাখ টাকার বেতন ও সুযোগ-সুবিধা ভোগ করেছেন। সব মিলিয়ে প্রায় ২৪/২৫ লাখ টাকার বেশি হবে না।

সোহেলের চাকরিতে যোগদানের পূর্বে পারিবারিক তথ্য অনুযায়ী রিকশাচালক পিতা ফজলুল হক দিন আনে দিন খায়। তার অন্য কোন আয়ের উৎস ছিল না। কিন্তু তিনি কালিহাতির সাতুটিয়ার গড়ে তুলেছে ফজলুল হক ভিলা। কিনেছেন অঢেল সম্পদ। বর্তমানে কালিহাতি বাজারে ৬ শতাংশ জমি, প্রতি শতাংশ ৩০,০০,০০০. ০০ (ত্রিশ লক্ষ) টাকা করে কিনে প্রায় ১০টি দোকান করে মার্কেট গড়ে তুলেছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সোহেল মিয়া সমস্ত-সম্পত্তি করেছেন পিতা দিনমজুর ফজলুল হকের নামে। যেন এই ব্যাপারে গোয়েন্দা সংস্থা কিংবা দুর্নীতি দমন কমিশন তার তথ্য খুঁজে না পায়। সোহেলের ছোট এক ভাই সাতুটিয়ার একটি কম্পিউটারের দোকান দিয়েছে। অপর ভাই আনোয়ার তথ্য অনুযায়ী, সরকারি চাকুরি করার চেষ্টা করছে অথবা করছে।

সোহেলের এলাকায় একাধিক বাসিন্দারা জানান, ফজলুল তো রিক্সাচালাক, শুনেছি ছেলে অনেক বড় অফিসার, কিভাবে এত সম্পদের মালিক হলো তা আমাদের বোধগম্য নয়।

এই ব্যাপারে সোহেল মিয়াকে ফোন দিলে তিনি ফোন ধরেননি। ক্ষুদে বার্তা পাঠিয়েও সাড়া মিলেনি। গণপূর্ত ও গৃহায়ণ মন্ত্রণালয়ের প্লট জালিয়াতি, টেন্ডার, বদলিসহ নানা অপকর্মের নেপথ্য কাহিনী প্রকাশিত হবে দ্য ফিন্যান্স টুডের পরবর্তী ধারাবাহিক প্রতিবেদনে।


Editor & Publisher : Md. Motiur Rahman

Pritam-Zaman Tower, Level 03, Suite No: 401/A, 37/2 Bir Protik Gazi Dastagir Road, Purana Palton, Dhaka-1000
Cell : (+88) 01706 666 716, (+88) 01711 145 898, Phone: +88 02-41051180-81