12/18/2025
নিজস্ব প্রতিবেদক | Published: 2025-12-17 21:14:51
ডিজিটাল ভূমি ব্যবস্থাপনার যুগে নতুন করে কঠোর অবস্থানে আছে সরকার। দলিল থাকলেও এবার ৫ ধরনের জমির দখল ছাড়তে বাধ্য হবেন দখলদাররা। ২০২৫ সালের মধ্যে এসব জমি পুনরুদ্ধারের নির্দেশ দিয়েছে ভূমি মন্ত্রণালয়।
ভূমি মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, “দলিল যার, জমি তার”—এই প্রচলিত ধারণা এখন সব ক্ষেত্রে আর প্রযোজ্য নয়। কারণ অনেক ক্ষেত্রে দলিল বৈধ হলেও দখল আইনসম্মত নয়। তাই অবৈধ দখলদারদের বিরুদ্ধে নেওয়া হবে কঠোর আইনি ব্যবস্থা।
সাম্প্রতিক সময়ে জারি করা একাধিক সরকারি পরিপত্র ও প্রজ্ঞাপনে স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে—নিম্নোক্ত পাঁচ ধরনের জমি কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান দখলে রাখতে পারবে না, এমনকি দলিল থাকা সত্ত্বেও।
১️. সাব-কবলা দলিল (উত্তরাধিকার বণ্টন ছাড়া করা দলিল)
যেসব জমি উত্তরাধিকারীদের মধ্যে আইনগতভাবে বণ্টন না করেই সাব-কবলা দলিল করা হয়েছে, সেসব দলিল যেকোনো সময় আদালত বাতিল ঘোষণা করতে পারেন।
বিশেষ করে কোনো ওয়ারিশকে বঞ্চিত করে জমি বিক্রি করলে বা হস্তান্তর করলে, সেই দলিল আইনি ঝুঁকির মধ্যে পড়ে। বঞ্চিত ওয়ারিশ মামলা করলে দখল হারাতে হবে।
২️. হেবা দলিল (দানপত্র)
হেবা দলিল তখনই বৈধ হয় যখন—
> দাতার সম্পূর্ণ মালিকানা থাকে
> গ্রহীতা বাস্তবে দখল বুঝে পায়
> কোনো প্রতারণা, চাপ বা শর্ত ভঙ্গ না থাকে
এই শর্তগুলোর যেকোনো একটিও লঙ্ঘিত হলে হেবা দলিল বাতিলযোগ্য হবে। ফলে বহু পুরোনো হেবা দলিল থাকার পরও দখল ছাড়তে হতে পারে।
৩️. জাল দলিল
ডিজিটাল ভূমি রেকর্ড (ডিএলআরএস, ই-মিউটেশন, ই-পর্চা) চালুর পর জাল দলিল শনাক্ত করা এখন অনেক সহজ হয়েছে।
যেভাবে করা হয় জাল দলিল
> ভুয়া খতিয়ান দিয়ে করা
> অন্যের জমি নিজের নামে রেকর্ড করা
> সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের অসাধু চক্রের মাধ্যমে তৈরি
এসব দলিল আদালত এবং প্রশাসনের মাধ্যমে সরাসরি বাতিল করা যাবে। প্রকৃত মালিক বৈধ কাগজ দেখাতে পারলে দখল উদ্ধার হবে।
৪️. খাস খতিয়ানের জমি
খাস খতিয়ানের জমি মানেই সরকারি মালিকানাধীন জমি। এই জমি কেউ নিজের নামে রেকর্ড করে বিক্রি করলেও তা আইনত অবৈধ হবে। নির্দেশনা অনুযায়ী—
> জেলা প্রশাসক সরাসরি মামলা করতে পারবেন
> অবৈধ দখল উচ্ছেদ করা হবে
> দলিল স্বয়ংক্রিয়ভাবে বাতিল হবে
৫️. অর্পিত সম্পত্তি
দেশভাগ ও যুদ্ধ-পরবর্তী সময়ে পরিত্যক্ত যেসব সম্পত্তি অর্পিত সম্পত্তি হিসেবে তালিকাভুক্ত হয়েছে, সেসব জমি ব্যক্তিগতভাবে দখলে রাখা যাবে না।
এসিল্যান্ডের মাধ্যমে এসব জমি শনাক্ত করে সরকারের কাছে বুঝিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
ভূমি মন্ত্রণালয় কর্তৃক জারিকৃত পরিপত্রে বলা হয়েছে— “আদালতের রায় ছাড়া অবৈধ দখলদারিত্ব বৈধতা পাবে না। সকল অনিয়মিত রেকর্ড ও দলিল পর্যায়ক্রমে বাতিল করা হবে।”
যারা দীর্ঘদিন ধরে এসব জমি ভোগ করে আসছেন, তাদের দ্রুত আইনজীবীর পরামর্শ নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।
> সরকারি জমি পুনরুদ্ধার
> জাল দলিল বন্ধ করা
> প্রকৃত মালিককে তার জমির অধিকার ফিরিয়ে দেয়া
> ভূমি রাজস্ব বৃদ্ধি
> ভূমি সংক্রান্ত মামলার জটিলতা কমানো
ভূমি মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ২০২৫ সালের মধ্যে সারাদেশে পূর্ণাঙ্গ ডিজিটাল ভূমি ব্যবস্থাপনা বাস্তবায়নের মাধ্যমে এই প্রক্রিয়া আরও জোরদার করা হবে।
> ই-পর্চা যাচাই করুন
> নামজরি আছে কি না দেখুন
> সাব-কবলা বা হেবা হলে আইনি বৈধতা মিলিয়ে নিন
> খাস বা অর্পিত জমি হলে দ্রুত আইনজীবীর শরণাপন্ন হন
Editor & Publisher : Md. Motiur Rahman
Pritam-Zaman Tower, Level 03, Suite No: 401/A, 37/2 Bir Protik Gazi Dastagir Road, Purana Palton, Dhaka-1000
Cell : (+88) 01706 666 716, (+88) 01711 145 898, Phone: +88 02-41051180-81