28150

05/15/2025

নতুন করে মালয়েশিয়া শ্রমবাজার বাজার খোলার সম্ভাবনা : এবারও সিন্ডিকেটের অপতৎপরতা!

বিশেষ প্রতিবেদক | Published: 2025-05-15 00:35:02

দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর সরকারের প্রচেষ্টায় মালয়েশিয়া শ্রমবাজার আবারো উম্মুক্ত হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।

প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড আসিফ নজরুল আগামী ১৫ ই মে মালয়েশিয়া সরকারের সাথে দ্বিপাক্ষিক আলোচনা হবে।

সূত্র মতে, এর আগে ২০১৬-২০১৮ সালে মাত্র ১০টি এজেন্সির মাধ্যমে এবং ২০২২-২০২৪ সালে প্রথমে ২৫টি এবং পরে ১০০টি এজেন্সির সিন্ডিকেটের মাধ্যমে মালয়েশিয়া শ্রমবাজার উম্মুক্ত হয়। এই সিন্ডিকেটের অনিয়ম, দুর্নীতি ও অতিরিক্ত অভিবাসন খরচের কারণে বারবার এই শ্রমবাজার বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। কর্মীরা অতিরিক্ত খরচ দেয়ার পরও হাজার হাজার কর্মী চাকুরী, বেতন না পেয়ে মানবেতর জীবন যাপন করতে বাধ্য হয়েছিল। সিন্ডিকেটের অতিরিক্ত ফী এর কারণে বহুজাতিক কোম্পানিগুলো কর্মী নিতে পারেনি।

সাবেক ফ্যাসিবাদী সরকারের মতো এবারও সিন্ডিকেটের মাধ্যমে কর্মী প্রেরণ করতে গেলে কর্মীরা ক্ষতিগ্রস্থ হবে,২৫০০ রিক্রুটিং এজেন্সির মধ্যে ৯৫ শতাংশ এজেন্সি বৈষম্যের শিকার হবে।

বিশ্বস্ত সূত্র থেকে পাওয়া তথ্যে জানা গেছে, সরকারের সুনাম নষ্ট করার জন্যই সেই পুরাতন চক্র তাদের ব্যক্তিস্বার্থে প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়কে ভুল তথ্য দিয়ে সিন্ডিকেট করার চেষ্টা করে যাচ্ছে। এক্ষেত্রে সরকারকে সতর্ক থাকতে হবে।

উল্লেখ্য যে মালয়েশিয়া আরো ১৪টি সোর্স কান্ট্রি থেকে শ্রমিক আনলেও বাংলাদেশ ছাড়া অন্য কোনো দেশে সিন্ডিকেট সিস্টেম নেই।

মালয়েশিয়ায় জনশক্তি প্রেরণের ক্ষেত্রে সিন্ডিকেট করে প্রত্যেক কর্মী থেকে সকল খরচ বাদ দিয়ে অন্যায়ভাবে সিন্ডিকেটকারীগণ অতিরিক্ত ১,৫২,০০০/- টাকা চাঁদা বাধ্যতামূলকভাবে আদায় করে। এরফলে প্রত্যেক কর্মীকে প্রায় ৫-৬ লক্ষ টাকা খরচ করে মালয়েশিয়া যেতে হয়েছে। 

এভাবে গরিব, নিরীহ মালয়েশিয়াগামী কর্মীদের থেকে অতিরিক্ত প্রায় ১২ হাজার কোটি টাকা চাঁদা আদায়কারী সিন্ডিকেটের মূল হোতা বায়রার সাবেক মহাসচিব রুহুল আমিন (স্বপন), তার পার্টনার মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশী বংশোদ্ভুদ দাতোশ্রী আমিন নূর এবং তাদের  সহযোগী সাবেক স্বৈরাচারী সরকারের প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর প্রটোকল অফিসার ও সাবেক এমপি আলাউদ্দিন নাসিম, সাবেক অর্থমন্ত্রী লোটাস কামাল ও তার পরিবার, সাবেক মন্ত্রী ইমরান আহমেদ, সাবেক সচিব ড: মনিরুস সালেহীন, সাবেক এমপি বেনজির আহমেদ, সাবেক এম পি লেফটেনেন্ট জেনারেল মাসুদ উদ্দিন চৌধুরী, সাবেক এমপি নিজাম হাজারী, বায়রার নির্বাহী সদস্য কাজী মফিজুর রহমান, বায়রার সাবেক সভাপতি আবুল বাসার ও তার পরিবারসহ সাবেক সরকারের প্রভাবশালী নেতাদের যোগসাজশে মালয়েশিয়ার শ্রমবাজারে চরম অরাজকতা, অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে সিন্ডিকেট করে হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছেন। তাদের প্রত্যেকের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে।

দেশের স্বার্থে , কর্মীদের স্বার্থে , সরকারের ইমেজের স্বার্থে মালয়েশিয়া শ্রমবাজার কোনো ভাবেই যাতে সিন্ডিকেট করতে না পারে সে ব্যাপারে উদ্যোগী হতে হবে।

এই বিযয়ে অভিবাসন বিশেষজ্ঞ ব্রাকের শরিফুল হাসান জানান যে, প্রথম কথা হচ্ছে মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার খোলার ক্ষেত্রে যে বিষয়টি বিবেচনা করতে হবে তা হলো অতীতের যারা সিন্ডিকেটের সঙ্গে যুক্ত ছিল তারা যেন আর কোনোভাবেই সিন্ডিকেট করার সুযোগ না পায়। বিশেষ করে এফডব্লিউসিএমএস এর অনলাইন সিস্টেম এর মাধ্যমে দাতোশ্রী আমিন নুর যে অনলাইন এর মাধ্যমে সিন্ডিকেটের করে দুর্নীতি করার সুযোগ পেয়েছিল এই ধরনের অনলাইন সিস্টেম বজায় রেখে দুর্নীতি ও সিন্ডিকেট মুক্ত শ্রমবাজার তৈরি করা সম্ভব নয়। নতুন উদ্যোগে দেখতে হবে দিন শেষে যেন প্রবাসীদের অতিরিক্ত অর্থ ব্যয় করতে না হয়,  প্রতারণার শিকার না হতে হয়, সিন্ডিকেটের শিকার না হয়।

এছাড়া মালয়েশিয়াতে ইতিমধ্যে যারা অনিয়মিতভাবে বা অবৈধভাবে রয়েছে সেইসব শ্রমিকদের বৈধকরণ জরুরি বিষয়। এছাড়া নতুন শ্রমবাজার উন্মুক্ত হলে ১৮ হাজার কর্মী যারা যেতে পারেনি, বারবার আশ্বাস-বিশ্বাসেও প্রতারিত হয়েছেন, তাদেরকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বিবেচনায় নেওয়া প্রয়োজন।


Editor & Publisher : Md. Motiur Rahman

Pritam-Zaman Tower, Level 03, Suite No: 401/A, 37/2 Bir Protik Gazi Dastagir Road, Purana Palton, Dhaka-1000
Cell : (+88) 01706 666 716, (+88) 01711 145 898, Phone: +88 02-41051180-81