June 17, 2025, 8:37 pm


বিশেষ প্রতিবেদক

Published:
2025-06-17 15:05:42 BdST

ইরান-ইসরাইল যুদ্ধখুব বড় কিছু ঘটতে যাচ্ছে


চলমান ইসরায়েল-ইরান যুদ্ধে খুব বড় কিছু একটা ঘটতে যাচ্ছে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন মধ্যপ্রাচ্য এবং সামরিক বিশেষজ্ঞ সাবিনা আহমেদ।

১৭ জুন মঙ্গলবার সকালে তার ভেরিফায়েড ফেসবুক আইডিতে দেয়া এক পোস্টে ইসরায়েল-ইরান যুদ্ধের সর্বশেষ পরিস্থিতি পয়েন্ট আকারে তুলে ধরে তিনি এই ইঙ্গিত দিয়েছেন।

'দি ফিন্যান্স টুডে'র পাঠকদের জন্য সাবিনা আহমেদের পর্যবেক্ষণ ও বিশ্লেষণ নিচে তুলে ধরা হলো:

১) ট্রাম্প জি-৭ মিটিং শেষ না করেই ওয়াশিংটন ফিরে গেছেন আজ।

২) কিছুক্ষণ আগে ট্রাম্প তেহরানের সব নাগরিককে তেহরান ছেড়ে যেতে ট্রুথ সোশ্যালে পোস্ট করেছে।

৩) নেতানিয়াহু ডেসপারেটলি আমেরিকাকে ইরান আক্রমণে নামাতে চাইছে। ইরানের পাল্টা আক্রমনের মাত্রা ইসরায়েলের ধারণারও বাইরে ছিলো। 

৪) ইরান তাদের যাদুঘরগুলো থেকে প্রত্নতাত্ত্বিক আর্টিফ্যাক্টস নিরাপদ স্থানে সরিয়ে ফেলছে।

৫) আয়াতোল্লাহ খামেনি আজ খুব প্যাশনেট একটা বার্তা দিয়েছে দেশবাসীর উদ্দেশ্যে। যেখানে বলেছেন উনি যদি নিহতও হন, দেশবাসী যেন লক্ষ্যে অবিচল থাকে।

৬) মার্কিন সিনেটর বার্নি স্যান্ডার্স আজ (১৬ জুন, ২০২৫) একটি গুরুত্বপূর্ণ বিল উত্থাপন করেছেন, যার নাম “নো ওয়ার অ্যাগেইনস্ট ইরান অ্যাক্ট”। এই বিলের উদ্দেশ্য হলো প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে ইরানের বিরুদ্ধে কংগ্রেসের অনুমোদন ছাড়া কোনো সামরিক পদক্ষেপ নিতে বাধা দেওয়া। শুধুমাত্র স্বরক্ষার ক্ষেত্রে (ওয়ার পাওয়ার্স অ্যাক্ট অনুযায়ী) এই নিষেধাজ্ঞা প্রযোজ্য হবে না।

৭) আজ ইরানের আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি তার দেশবাসীর উদ্দেশে একটি আবেগঘন ভাষণ দিয়েছেন বলে জানা গেছে।

তিনি বলেছেন, “আমার শরীরের কোনো মূল্য নেই, আমার জীবনের কোনো গুরুত্ব নেই। এমনকি তারা আমাকে হত্যা করলেও, এটাকে আমাদের ক্ষতি মনে করো না, যতক্ষণ তোমরা নীতির প্রতি অটল থাকবে।”

৮) আজ চীনের দূতাবাস ইসরায়েলে অবস্থানরত তাদের নাগরিকদের যত দ্রুত সম্ভব দেশ ত্যাগ করার পরামর্শ দিয়েছে। দূতাবাস জর্ডানের মাধ্যমে স্থল সীমান্ত ব্যবহার করে নিরাপদে বেরিয়ে যাওয়ার সুপারিশ করেছে, কারণ ইসরায়েল-ইরান সংঘাতের কারণে নিরাপত্তা পরিস্থিতি "অত্যন্ত খারাপ এবং জটিল" বলে বর্ণনা করা হয়েছে। এই নির্দেশনা ইসরায়েলের বিমানসীমা বন্ধ হওয়ার পটভূমিতে দেওয়া হয়েছে।

৯) কিছুক্ষন আগে ইরানের ইসলামিক রেভলুশনারি গার্ড কর্পস (আইআরজিসি) হিব্রু ভাষায় একটি বিবৃতি জারি করে ইসরায়েলের সম্পূর্ণ অঞ্চল খালি করার আহ্বান জানিয়েছে। বিবৃতিতে বলেছে, “দখলকৃত অঞ্চলে অবস্থিত যেকোনো শহর, স্থাপনা বা কেন্দ্র বৈধ সামরিক লক্ষ্য হিসেবে বিবেচিত হবে।”

আমেরিকা যদি আক্রমণে সরাসরি অংশগ্রহণ না করে, তাহলে ইসরায়েলের পক্ষে ইরানের আকাশ দখল করা সম্ভব হবে না, সেক্ষেত্রে ইরান ইসরায়েল অভিমুখে মিসাইল ক্ষেপণ অব্যাহত রাখবে। যা ইসরায়েলের জন্য অসহনীয় পর্যায়ে চলে যাচ্ছে।

এই আক্রমণ-পাল্টা আক্রমনে কেবল যে ইরানের ক্ষয়ক্ষতি হচ্ছে তা নয়, ইসরায়েলেরও হচ্ছে। ইসরায়েল সেসব ক্ষয়ক্ষতির সংবাদ বিশ্ববাসী থেকে লুকানোর প্রচাষ্টায় আজ হাইফাতে আন্তর্জাতিক সাংবাদিকদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করেছে।

এভাবে চলতে থাকলে উভয় দেশেই প্রচুর ক্ষয়ক্ষতি হবে। তবে ইরানের মানুষ কষ্ট সহিষ্ণু, হাজার বছরের যুদ্ধের ইতিহাস যাদের ঝুলিতে, কেবল বিংশ শতাব্দীতেই টানা ১০ বছর যুদ্ধ করে মার খাওয়া আর দেয়ার অভিজ্ঞতা ইরানের আছে। কিন্তু গত ১৯ বছর ইসরায়েল কেবল একচেটিয়া মার দিয়েছে, এবার খাচ্ছে। যখন খুশি লেবাননে উড়ে গিয়ে হামলা করেছে, সিরিয়াতে যখন তখন উড়ে গিয়ে যা ইচ্ছা ধ্বংস করেছে, এমন কি কিছুদিন আগেও জায়গা দখল করে নিয়েছে।

ইরানেও একই কাজ করতে যেয়ে খেয়েছে ধরা। অবশ্য এই সংঘাত শুরু হয়েছে কেবল ৪ দিন। সামনের দিনগুলো বলে দিবে ইসরায়েল কি থামবে, নাকি আমেরিকাকে আড়ালে রেখে একাই যুদ্ধ চালিয়ে যাবে। এতে যথেষ্ট সন্দেহ আছে। আমেরিকাকে সরাসরি আক্রমণে জড়াতে না পারলে ইসরায়েলকে থেমে যেতে হবে।

Unauthorized use or reproduction of The Finance Today content for commercial purposes is strictly prohibited.