April 26, 2024, 8:26 am


কামরুল ইসলাম (মাদারীপুর প্রতিনিধি)

Published:
2022-07-26 04:14:59 BdST

পদ্মা সেতু বাস্তবায়ন- বদলে গেছে দেশের দক্ষিন পশ্চিমাঞ্চলের অর্থনৈতিক চিত্র


পদ্মা সেতু উদ্বোধনের পরে ঢাকার সঙ্গে দেশের দক্ষিন পশ্চিমাঞ্চলের একুশ'টি জেলার সরাসরি সড়ক যোগাযোগ চালু হওয়ার ফলে এ অঞ্চলের যোগাযোগ ব্যবস্থার অভূতপূর্ব পরিবর্তন এসেছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর যুগোপযোগী সাহসী এই উদ্যোগের ফলে শুধু যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নয়নই নয় শিল্পায়ন, পর্যটন, ব্যবসা-বাণিজ্য, আমদানি-রপ্তানি সহ কৃষি ক্ষেত্রে আসবে ব্যাপক পরিবর্তন। দীর্ঘদিন যাবত উন্নয়ন যোগাযোগ ও শিল্পায়নে দক্ষিন পশ্চিমাঞ্চলের একুশ জেলা অবহেলিত ছিল। পদ্মা সেতুতে রেল যোগাযোগ চালু হলে ঢাকার সাথে পার্শবর্তী দেশ ভারত হয়ে সার্কভুক্ত অন্যান্য দেশের সাথেও যোগাযোগ ব্যবস্থায় ব্যাপক পরিবর্তন আসবে। দেশের সর্বদক্ষিনের অবস্থিত বিশ্বের সর্ববৃহৎ ম্যানগ্রোভ সুন্দরবন খুলনা ও বাগেরহাট অঞ্চলে অবস্থিত। ইতোমধ্যে পদ্মা সেতু চালুর ফলে সুন্দরবন ভ্রমনে পর্যন্টকদের অন্যতম আকর্ষনীয় স্থান হিসেবে পছন্দের তালিকায় উঠে এসেছে। এছাড়াও পটুয়াখালী জেলার সাগরকন্যা হিসেবে খ্যাত কুয়াকাটা ও পর্যটকদের পদভারে মুখোরিত হয়ে উঠেছে। কুয়াকাটা এমন একটি পর্যটন কেন্দ্র যেখান থেকে সূর্য্যদয় ও সূর্য্যাস্ত একই সাথে উপভোগ করা যায়। মংলা বন্দর, পায়রা সমুদ্রবন্দর দেশের আমদানি-রপ্তানিতে অর্থনৈতিক চিত্র বদলে দিবে। দেশের নতুন নতুন উদ্যোক্তারা উতোমধ্যে দক্ষিণাঞ্চলে বিনিয়োগের জন্য ভিড় করছে। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিস্থল দক্ষিনের জেলা গোপালগঞ্জের টুংগিপাড়ায়। সব কিছু মিলিয়ে দেশের দক্ষিন-পশ্চিমাঞ্চল আগামী দিনের অর্থনীতির নতুন দ্বার উন্মোচিত হতে যাচ্ছে। এ সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে এখনই কার্যকর ও দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা গ্রহন না করলে এক শ্রেণির ভূমি খেকো ও ব্যবসায়ীরা এ অঞ্চলকে কলুষিত করে ফেলার সম্ভাবনা রয়েছে।

ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেস হাইওয়ে দুই'পাশে ইতোমধ্যে এক শ্রেনির ভূমি খেকো ব্যবসায়ীরা অপরিকল্পিতভাবে নগরায়নের নামে প্রকল্প গড়ার জন্য উঠে পড়ে লেগেছে। এক্ষেত্রে সরকারের কঠোর নজরদারি না থাকলে এ অঞ্চলটিও অপরিকল্পিত নগরায়নের নামে নৈরাজ্য সৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

পদ্মা সেতু বাঙ্গালী জাতির অহংকারের প্রতীক। এ সেতুকে শুধুমাত্র একটি সেতু হিসেবে চিহ্নিত করলেই হবেনা, এ সেতু নির্মানে বাঙ্গালী জাতি নিজেদের সক্ষমতার আত্মপরিচয়ে নিজেদের তুলে ধরতে সক্ষম হয়েছে। পদ্মা সেতুর দুই প্রান্তে রয়েছে বিশাল পর্যটনের সম্ভাবনা। পরিকল্পিতভাবে এ সেতুর দুই'প্রান্তে আন্তর্জাতিক মানের পর্যটন নগরী গড়ে তোলা সম্ভব। পদ্মা নদীর অববাহিকায় জেগে উঠা চর যেনো এক বিশাল পর্যটনের ক্যানভাস। এ চর'কে ঘিরে সরকারের রয়েছে বিশাল পরিকল্পনা। দেশী বিদেশী পর্যটন বিশেষজ্ঞ ও উদ্যোক্তাদের পরামর্শ ও পরিকল্পনায় এ চরে বিশাল পর্যটন নগরী গড়ে তোলা সম্ভব। পদ্মা নদীর মাঝে জেগে উঠা এ চর বাংলাদেশের জন্য পর্যটনের নতুন এক দ্বার উন্মোচিত করতে পারে।

পদ্মা সেতুকে ঘিরে দেশের দক্ষিন-পশ্চিমাঞ্চলের জেলাগুলোতে যেমন রয়েছে অফুরন্ত অর্থনৈতিক নতুন দ্বার উন্মোচনের সম্ভাবনা ঠিক তেমনই অপরিকল্পিতভাবে যদি ব্যবসায়িক মনোবিত্তিতে সেতুর সম্ভাবনাকে কাজে লাগানো হয় তাহলে দেশী বিদেশী নতুন নতুন উদ্যোক্তারা তাদের মুখ ফিরিয়েও নিতে পারে। সুতরাং ভবিষ্যৎ সম্ভাবনার দ্বার'কে সামনে এগিয়ে নিয়ে যেতে হলে সর্বপরি রাজনৈতিক মনোবিত্তি পরিহার করতে হবে, এটাই এখন সময়ের দাবি। আর এ উদ্যোগের জন্য কান্ডারি হিসেবে অকুতোভয় সৈনিক মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে এগিয়ে আসতে হবে।

Unauthorized use or reproduction of The Finance Today content for commercial purposes is strictly prohibited.


Popular Article from Spot Light