December 31, 2025, 1:32 am


শাহীন আবদুল বারী ও সামিউর রহমান লিপু

Published:
2025-12-30 23:17:00 BdST

বাংলাদেশের রাজনীতির উজ্জ্বল নক্ষত্রের বিদায়ে শোকাহত গোটা জাতিসংগ্রামী মহাকাব্যের সমাপ্তি


বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাস আজ এক গভীর শূন্যতার মুখোমুখি। সকলের প্রিয় দেশনেত্রী, তিনবারের নির্বাচিত সাবেক প্রধানমন্ত্রী, গণতন্ত্রের ধারক ও বাহক এবং আপামর জনগণের আস্থার অন্যতম প্রধান প্রতীক বিএনপির চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া আর নেই (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৮০ বছর।

দেশী-বিদেশী বহু অভিজ্ঞ চিকিৎসকদের নেয়া আপ্রান প্রচেষ্টাগুলোকে ব্যর্থ করে দিয়ে বাংলাদেশের রাজনীতির ইতিহাসে অবিসংবাদিত নেত্রীতে পরিনত হওয়া এবং জনগণের দেয়া 'দেশনেত্রী’, ‘আপসহীন’ উপাধিতে ভূষিত খালেদা জিয়া আজ চিরবিদায় নিলেন তাঁর প্রিয় দেশবাসী কাছ থেকে।

খালেদা জিয়ার মৃত্যুর সংবাদটি নিশ্চিত করেছেন তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক ও বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য অধ্যাপক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন।

তিনি বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া আজ সকাল ৬টায় ফজরের ঠিক পরে ইন্তেকাল করেছেন।

শেষ মুহূর্তে মায়ের পাশে তারেক রহমান

এভারকেয়ার হাসপাতালে মৃত্যুর শেষ মুহূর্তে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার পাশে ছিলেন তাঁর জ্যেষ্ঠ ছেলে ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।

এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন তারেক রহমানের স্ত্রী ডা. জুবাইদা রহমান, মেয়ে জাইমা রহমান, প্রয়াত আরাফাত রহমানের স্ত্রী শামিলা রহমান সিঁথি, বেগম জিয়ার ছোট ভাই শামীম এসকান্দার এবং তার স্ত্রী, বড় বোন সেলিনা ইসলামসহ পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা।

এছাড়া, বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এবং খালেদা জিয়ার চিকিৎসায় নিয়োজিত মেডিকেল বোর্ডের সব সদস্য মৃত্যুর সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ আজ মঙ্গলবার সকাল সোয়া সাতটার দিকে সাংবাদিকদের জানান, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সকাল সাড়ে ছয়টার দিকে আমাকে কল দিয়ে আবেগাপ্লুত কণ্ঠে জানান, ‘আম্মা আর নেই।’

এর আগে বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য আতিকুর রহমান রুমন জানান, খালেদা জিয়া সকাল ছয়টার দিকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও পরিবারের অন্য সদস্যরা রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে রয়েছেন।

তিনি আরও বলেন, বেগম খালেদা জিয়ার অকাল প্রয়ানে আমরা শোকাহত। আমরা বেগম জিয়ার রূহের মাগফিরাত কামনা করছি এবং সকলের নিকট তার বিদেহী আত্মার জন্য দোয়া চাচ্ছি।

খালেদা জিয়ার জানাজা পড়াবেন বায়তুল মোকাররমের খতিব

বেগম খালেদা জিয়ার জানাজা পড়াবেন জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের খতিব মুফতি আবদুল মালেক। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর গণমাধ্যমে এই বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, আগামীকাল বুধবার দুপুর দুইটায় জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজা মাঠ ও সংলগ্ন মানিক মিয়া এভিনিউসহ পুরো এলাকাজুড়ে খালেদা জিয়ার জানাজার নামাজ অনুষ্ঠিত হবে।

খালেদা জিয়ার জানাজার পুরো বিষয়টি সঞ্চালন করবেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান। জানাজা শেষে বেগম খালেদা জিয়াকে স্বামী শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের পাশে দাফন করা হবে।

লড়াই করে বার্ধক্যের কাছে অসহায় আত্মসমর্পণ

বেগম খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন ধরে হৃদরোগ, ডায়াবেটিস, আর্থ্রাইটিস, লিভার সিরোসিস ও কিডনির জটিলতাসহ নানা শারীরিক সমস্যায় ভুগছিলেন।

৫ আগষ্টে ছাত্র জনতার গণঅভ্যুত্থানে স্বৈরাচারী শেখ হাসিনার সরকারের পতনের ফলশ্রুতিতে সকল মিথ্যা ও রাজনৈতিক প্রতিহিংসামূলক মামলা থেকে মুক্তি পাওয়ার পর চলতি বছরের ৭ জানুয়ারি বেগম খালেদা জিয়াকে লন্ডনে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তাকে উন্নত চিকিৎসা দেওয়া হয়েছিল। তাঁর স্বাস্থ্যের অনেকটা উন্নতিও হয়েছিল।

শরীর–মনে স্বাস্থ্যগত নানা ধকল সহ্য করে তিনি দুর্বল হয়ে পড়েছিলেন। বয়সও ছিল তার প্রতিকূলে। তিনি প্রায়ই গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়তেন ফলে দ্রুত তাকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হতো।

এমনই এক পর্যায়ে গত ২৩ নভেম্বর শ্বাসকষ্ট দেখা দিলে বেগম খালেদা জিয়াকে শেষবারের মতো রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। দেশি ও বিদেশি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের সমন্বয়ে গঠিত মেডিকেল বোর্ডের তত্ত্বাবধানে তার চিকিৎসা চলছিল।

এক মাসের কিছু বেশি সময় ধরে তিনি সেখানেই চিকিৎসাধীন ছিলেন। এবার তিনি আর চিকিৎসায় সাড়া দিতে পারলেন না। চিকিৎসকদের সব প্রচেষ্টাকে ব্যর্থ করে পাড়ি জমালেন পরপারে।

বিদায়বেলায় বেগম খালেদা জিয়া বিএনপির সর্বস্তরের নেতাকর্মী, সমর্থক, অনুসারী ও দেশের আপামর জনগণকে অশ্রুসিক্ত করে গেলেন। তার মৃত্যুর খবর প্রকাশের পর হাসপাতাল চত্বর ও আশপাশের এলাকায় তৈরি হয় শোকস্তব্ধ এক পরিবেশ।

বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবন

বেগম খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক জীবন ছিল সংগ্রামে ভরপুর। কারাবরণ, অসুস্থতা ও রাজনৈতিক প্রতিকূলতা সত্ত্বেও তিনি কখনোই নেতৃত্বের দাবিতে নীরব হননি। তাঁর জীবন প্রমাণ করে—রাজনীতি কেবল ক্ষমতার বিষয় নয়, এটি আদর্শ, বিশ্বাস ও আত্মত্যাগের নাম।

বেগম খালেদা জিয়া বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির চেয়ারপারসন, যিনি ১৯৯১ সাল থেকে তিনবার বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি দেশের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী এবং মুসলিম বিশ্বের দ্বিতীয় নির্বাচিত নারী সরকারপ্রধান।

বেগম জিয়ার দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবন কেবল ক্ষমতার শীর্ষে পৌঁছানোর গল্প নয়; এটি ছিল প্রতিকূলতা, আত্মত্যাগ, রাজনৈতিক দৃঢ়তা ও নেতৃত্বের এক অনন্য দৃষ্টান্ত।

বেগম জিয়া দেশের রাজনীতিতে এক অনন্য রেকর্ডের অধিকারী। নির্বাচনী ইতিহাসে তার এই অনন্য রেকর্ড হলো পাঁচটি জাতীয় নির্বাচনে ২৩টি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে সবগুলোতে জয়ী হওয়া। ১৯৯১ থেকে ২০০১ সালের সাধারণ নির্বাচনে তিনি পাঁচটি পৃথক আসন থেকে নির্বাচিত হন। ২০০৮ সালের নির্বাচনেও তিনি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা তিনটি আসনেই বিজয়ী হন।

তাঁর নেতৃত্বে দেশে সংসদীয় গণতন্ত্র পুনরায় প্রবর্তিত হয়, যা বাংলাদেশের সাংবিধানিক ইতিহাসে এক গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক। প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তিনি শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষি, নারী উন্নয়ন ও সামাজিক নিরাপত্তা খাতে বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করেন। বিশেষ করে নারী শিক্ষা ও গ্রামীণ উন্নয়নে তাঁর সরকারের নীতিমালা উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলে।

২০০১ সালে বেগম খালেদা জিয়া তৃতীয়বারের মতো প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হয়ে দেশের অবকাঠামো উন্নয়ন, দারিদ্র্য বিমোচন ও অর্থনৈতিক সংস্কারে নানা কর্মসূচি বাস্তবায়ন করেন। একই সঙ্গে রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বিতা, মতপার্থক্য ও বিতর্ক তাঁর এই শাসনামলকে জটিল করে তোলে। তবুও সমর্থকদের কাছে তিনি ছিলেন গণতন্ত্র ও জাতীয়তাবাদের এক অটল প্রতীক।

১৯৪৫ সালের ১৫ আগস্ট দিনাজপুর জেলায় ইস্কান্দার মজুমদার ও তৈয়বা মজুমদারের ঘরে তার জন্ম। তার বাবা ভারতের জলপাইগুড়ি থেকে দেশভাগের পর তৎকালীন পশ্চিম পাকিস্তানে চলে আসেন। তাদের আদি বাড়ি ফেনীতে। তিনি দিনাজপুর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে এবং পরে সুরেন্দ্রনাথ কলেজে পড়াশোনা করেন। ১৯৬০ সালে তিনি জিয়াউর রহমানকে বিয়ে করেন।

জিয়াউর রহমান বীর উত্তম রাষ্ট্রপতি হওয়ার পর বেগম জিয়া ফার্স্ট লেডি হিসেবে তার সঙ্গে বিভিন্ন রাষ্ট্রীয় সফরে অংশ নেন। এসময় তিনি যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী মার্গারেট থ্যাচার এবং নেদারল্যান্ডসের রানি জুলিয়ানা সহ বিভিন্ন দেশের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।

গৃহবধূ থেকে ক্ষমতার শীর্ষে

১৯৮১ সালে রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের মর্মান্তিক হত্যাকাণ্ড বেগম খালেদা জিয়ার জীবনে এক গভীর মোড় পরিবর্তন আনে। ব্যক্তিগত শোককে শক্তিতে রূপান্তর করে তিনি রাজনীতির কঠিন ময়দানে অবতীর্ণ হন।

উল্লেখ্য যে, ৪৪ বছর আগে রাষ্ট্রপতি ও বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান নিহত হন সেনাবাহিনীর বিপথগামী একদল সদস্যের হাতে। ১৯৮১ সালের ৩০ মে চট্টগ্রামের সার্কিট হাউসে প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান নিহত হওয়ার পর দুই সন্তানকে নিয়ে খালেদা জিয়া অবস্থান করছিলেন ঢাকা সেনানিবাসে।

দেশের এই চরম সংকটময় মুহূর্তে বিএনপি ছিল বিপর্যস্ত। দলের নেতৃত্ব কে নেবে, তা নিয়ে আলোচনা চলছিল। এমন পরিস্থিতিতে ১৯৮২ সালের ২ জানুয়ারি তিনি বিএনপির প্রাথমিক সদস্য হিসেবে যোগ দেন।

রাজনৈতিক প্রজ্ঞা ও দৃঢ়তা দিয়ে দ্রুতই দলের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। ১৯৮৪ সালের ১২ জানুয়ারি দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন এবং একই বছরের ১০ মে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় চেয়ারপারসন নির্বাচিত হন। পরে ১৯৯৩, ২০০৯ এবং ২০১৬ সালের কাউন্সিলে তিনি আরো তিনবার চেয়ারপারসন হন।

দলের দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই নানা প্রতিকূলতার মুখোমুখি হন তিনি। দলকে ঐক্যবদ্ধ রেখে এরশাদের স্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়ে তোলেন। কোনো সমঝোতা ছাড়াই দেশ ও জনগণের স্বার্থে আন্দোলন চালিয়ে যান। এতে এরশাদের পতন ত্বরান্বিত হয়।

১৯৮৭ সাল থেকে তিনি এরশাদ হটাও এক দফা আন্দোলন শুরু করেন এবং দীর্ঘ সংগ্রামের ফলেই ১৯৯১ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়।

১৯৯১ সালে প্রথমবার প্রধানমন্ত্রী হন খালেদা জিয়া। এরপর ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি দ্বিতীয়বার এবং ২০০১ সালে জোটগতভাবে নির্বাচন করে তৃতীয়বার প্রধানমন্ত্রী হন তিনি। এছাড়া, সার্কের চেয়ারপারসন হিসেবে তিনি দুইবার দায়িত্ব পালন করেন।

গ্রেফতার-নির্যাতনের মুখেও আপসহীন নেতৃত্ব

আশির দশকে সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে গণতান্ত্রিক আন্দোলনে তাঁর ভূমিকা ছিল সাহসী ও দৃঢ়। গ্রেপ্তার, নিপীড়ন ও রাজনৈতিক চাপ সত্ত্বেও তিনি আপস করেননি। ১৯৯০ সালের গণআন্দোলনের মধ্য দিয়ে স্বৈরশাসনের পতন এবং গণতন্ত্রের পুনঃপ্রতিষ্ঠায় তাঁর নেতৃত্ব ছিল ঐতিহাসিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ।

এরশাদবিরোধী আন্দোলনে ১৯৮৩ সালের ২৮ নভেম্বর, ১৯৮৪ সালের ৩ মে এবং ১৯৮৭ সালের ১১ নভেম্বর তিনি গ্রেফতার হন।

ওয়ান ইলেভেনের সময়ও তার ওপর গ্রেফতারি ঝড় নেমে আসে। সেনাসমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় ২০০৭ সালের ৩ সেপ্টেম্বর তাকে গ্রেফতার করা হয়। দীর্ঘ কারাবাসের পর তিনি সব মামলায় জামিন পান। কারাগারে থাকাকালে তাকে বিদেশে পাঠানোর চেষ্টা করা হলেও তিনি দেশ ছাড়েননি।

২০১০ সালের ১৩ নভেম্বর আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর তাকে ক্যান্টনমেন্টের বাড়ি থেকে উচ্ছেদ করা হয়। এই বাড়িটিতে তিনি ২৮ বছর বসবাস করছিলেন। জিয়াউর রহমান নিহত হওয়ার পর তৎকালীন রাষ্ট্রপতি আব্দুস সাত্তার বাড়িটি তার নামে বরাদ্দ দিয়েছিলেন।

গত আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে তার বিরুদ্ধে ৩৭টি মামলা হয়। রাজনীতিতে যোগ দেওয়ার পর থেকেই তিনি স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনের আপসহীন নেত্রীতে পরিণত হয়েছিলেন।

দেশ ছাড়ার জন্য তীব্র চাপ উপেক্ষা করে তিনি তার অবস্থান থেকে সরে যাননি। গত ১৫ বছরে নানা নির্যাতনের মুখে পড়তে হয়েছে, কারাগারেও থাকতে হয়েছে। তবুও খালেদা জিয়া কোনো আপস করেননি।

বেগম খালেদা জিয়ার পুরো রাজনৈতিক যাত্রা দৃঢ়তা, আপসহীনতা এবং সংগ্রামের প্রতীক হয়ে আছে। তাই তিনি হয়ে উঠেছেন দেশের রাজনীতিতে হার না মানা সংগ্রামের নাম।

আজ তাঁর প্রস্থান একটি যুগের অবসান ঘটাল। বেগম খালেদা জিয়া ইতিহাসে স্মরণীয় হয়ে থাকবেন একজন সাহসী নারী নেত্রী হিসেবে, যিনি কঠিন বাস্তবতার মধ্যেও নেতৃত্ব দিয়েছেন এবং বাংলাদেশের রাজনীতিতে নারীর ক্ষমতায়নের এক শক্তিশালী দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। তাঁর জীবন ও কর্ম ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য অনুপ্রেরণার উৎস হয়ে থাকবে।

Unauthorized use or reproduction of The Finance Today content for commercial purposes is strictly prohibited.