May 9, 2024, 4:23 pm


বিশেষ প্রতিবেদক

Published:
2023-05-02 14:15:59 BdST

ইউএনবি’র সাংবাদিক জাহাঙ্গীর আলমের বিরুদ্ধে ডিএসএ মামলায় বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিবাদ


ইউএনবি’র বিশেষ প্রতিবেদক মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলমের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলার তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানিয়েছে বিভিন্ন সংগঠন। 

বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (ক্র্যাব), ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ), মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশন (এমএসএফ), মানবাধিকার সংস্থা জাস্টিসমেকার্স বাংলাদেশ, রিপোর্টার্স অ্যাগেইনস্ট করাপশনের (র‌্যাক), বাংলাদেশ সিনে-জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশন সহ একাধিক সংগঠন এই মামলার তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা এবং অবিলম্বে উক্ত মামলাটি প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে।

বুধবার ক্র্যাবের সভাপতি মির্জা মেহেদী তমাল ও সাধারণ সম্পাদক মামুনুর রশীদসহ কার্যনির্বাহী কমিটির নেতৃবৃন্দ এ ঘটনার নিন্দা জানিয়েছেন।

হয়রানির উদ্দেশ্যেই মামলাটি করা হয়েছে বলে জানিয়েছে ক্র্যাব।

ক্র্যাব এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘মামলা অবিলম্বে প্রত্যাহার করা উচিত।’

অপর এক বিবৃতিতে ডিআরইউ সভাপতি মুরসালিন নোমানী ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মইনুল আহসানও অবিলম্বে ইউএনবি সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানান।

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘সাংবাদিক সমাজ শুরু থেকেই বলে আসছে যে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন মুক্ত ও স্বাধীন গণমাধ্যমের জন্য হুমকি। সাংবাদিকরা এই আইনের অপব্যবহারের শিকার হচ্ছেন।’

ডিআরইউ নেতারা অবিলম্বে ডিএসএ বাতিলের দাবি জানান।

পৃথক আরেকটি বিবৃতিতে জাহাঙ্গীর আলমের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বিশিষ্ট আইনজীবী এবং মানবাধিকার কর্মী সুলতানা কামালের নেতৃত্বে মানবাধিকার রক্ষা ও উন্নয়নের জন্য গঠিত নতুন সংস্থা মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশন (এমএসএফ)।

সংগঠনটি এই মামলার তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা এবং অবিলম্বে উক্ত মামলাটি প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে।

এমএসএফ বলেছে যে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন চিন্তা ও মত প্রকাশের স্বাধীনতায় বিশ্বাসীদের মধ্যে ভয় তৈরি করছে।

এতে আরও বলা হয়, ‘সাংবাদিকরা এই আইনের অপব্যবহারের শিকার হচ্ছেন।’

মানবাধিকার সংস্থাটি বলেছে, শুরু থেকেই আইনটি নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা হলেও এ আইনের নামে হয়রানি বেড়েই চলেছে।

ন্যায়বিচার সমুন্নত রাখতে এবং মত প্রকাশের স্বাধীনতা রক্ষায় নিবেদিত একটি মানবাধিকার সংস্থা জাস্টিসমেকার্স বাংলাদেশ, বার্তা সংস্থা ইউনাইটেড নিউজ বাংলাদেশের (ইউএনবি) বিশেষ সংবাদদাতা এবং জাস্টিসমেকার্স বাংলাদেশের সাবেক সহ-সভাপতি মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলমের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের (ডিএসএ) অধীনে দায়ের করা সাম্প্রতিক মামলায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।

জাস্টিসমেকার্স বাংলাদেশ এই কাজের তীব্র নিন্দা করে অবিলম্বে মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে।

এটি এই আইনের প্রয়োগের পুনর্মূল্যায়ন এবং সংবাদপত্রের স্বাধীনতা রক্ষা এবং সাংবাদিক ও মানবাধিকার রক্ষাকারীদের অধিকার রক্ষার জন্য অবিলম্বে পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।

জাস্টিসমেকার্স বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা মহাসচিব এবং বাংলাদেশের একজন বিশিষ্ট মানবাধিকার রক্ষক অ্যাডভোকেট শাহানুর ইসলাম পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে জাহাঙ্গীর আলমের বিরুদ্ধে ভিত্তিহীন মামলা প্রত্যাহার করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।

অ্যাডভোকেট শাহানুর সংবাদপত্রের স্বাধীনতা রক্ষা, দায়িত্বশীল সাংবাদিকতাকে উৎসাহিত করা এবং মানবাধিকার ও গণতান্ত্রিক নীতিকে সম্মান ও সমুন্নত রাখার পরিবেশ তৈরি করার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন।

উপরন্তু, তিনি উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন যে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনটি শুরু থেকেই ব্যাপক সমালোচনার বিষয়, কারণ এটি চিন্তা ও মত প্রকাশের স্বাধীনতার জন্য হুমকিস্বরূপ।

রিপোর্টার্স অ্যাগেইনস্ট করাপশনের (র‌্যাক) সদস্য মুহম্মদ জাহাঙ্গীর আলমের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে হাতিরঝিল থানায় মামলা দায়েরের ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে র‌্যাক।

এক বিবৃতিতে র‌্যাক’র কার্যনির্বাহী কমিটির পক্ষে সভাপতি আহম্মদ ফয়েজ ও সাধারণ সম্পাদক জেমসন মাহবুব এ নিন্দা জানান।

এদিকে সাংবাদিকের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলার প্রতিবাদ ও নিন্দা জানিয়েছে বাংলাদেশ সিনে-জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনও।

এদিকে ক্র্যাবের সাবেক সহ-সভাপতি মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে ঢাকার হাতিরঝিল থানায় দায়ের করা মামলায় আমাকে জড়ানোর অভিযোগ সম্পূর্ণ বানোয়াট, মিথ্যা ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।

‘এ ধরনের অভিযোগের সঙ্গে আমার কোনো সম্পর্ক নেই। একজন সাংবাদিক হিসেবে আমি সবসময়ই দায়িত্বশীল ও পেশাগতভাবে আমার দায়িত্ব পালন করার চেষ্টা করি।

তিনি বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি কিছু স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠী একটি খারাপ উদ্দেশ্য নিয়ে তাদের নিজস্ব স্বার্থ রক্ষার জন্য আমাকে এমন একটি মামলায় জড়িয়েছে।’

ইউএনবি’র সাংবাদিককে মামলায় আসামি করা হয়েছিল, কারণ তিনি একটি সোশ্যাল মিডিয়া গ্রুপের সদস্য ছিলেন যেখানে সরকারবিরোধী কার্যকলাপের অভিযোগ রয়েছে।

জাহাঙ্গীর আলম বলেন, “বিএনপির একজন নেতাকে গ্রেপ্তার করার পর পুলিশ তার কাছ থেকে একটি মোবাইল জব্দ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের (সিগনাল অ্যাপ) নাগরিক হটলাইন নামে একটি গ্রুপ পায়। সেখানে যারা আছে তারা সরকারবিরোধী কার্যক্রম প্রচারনা করতো বলা হয়েছে। সেখানে আমার নাম্বারটাও নাকি পাওয়া গেছে। তবে আমার বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ নাই। ওই গ্রুপে আমার কোনো মতামত বা পোস্ট ছিল না। কারন এ গ্রুপ সম্পর্কে আমার জানাও ছিল না। এসব গ্রুপে যে কেউ কাউকে (অ্যাড) যুক্ত করতে পারে, আমাকেও হয়তো কেউ অ্যাড করছে। এখানে একজনকে ছাড়া ওই গ্রুপের বাকী ১৯ জনের কাউকেই আমি চিনি না।”

গত ১২ এপ্রিল হাতিরঝিল থানার উপ-পরিদর্শক মো. আল-আমিন বাদী হয়ে জাহাঙ্গীরসহ ২১ জনের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলাটি করেন।

এদিকে হাতিরঝিল থানায় দায়ের করা ডিএসএ মামলায় জাহাঙ্গীরকে আগাম জামিন দিয়েছেন হাইকোর্ট।

জামিন আবেদনের শুনানি নিয়ে বুধবার বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি মোহাম্মদ আলীর বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

আদালতে জাহাঙ্গীরের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল এবং অ্যাডভোকেট ফরহাদ হোসেন।

জাহাঙ্গীর আলম বার্তা সংস্থা ইউএনবির চিফ ক্রাইম করেসপন্ডেন্ট এবং ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্র্যাব) সাবেক সহ-সভাপতি।

তিনি শিপিং অ্যান্ড কমিউনিকেশনস রিপোর্টার্স ফোরামের (এসসিআরএফ) সাধারণ সম্পাদক এবং ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) স্থায়ী সদস্য।

Unauthorized use or reproduction of The Finance Today content for commercial purposes is strictly prohibited.


Popular Article from FT বাংলা