July 27, 2024, 7:37 am


বিশেষ প্রতিবেদক

Published:
2023-11-30 18:56:43 BdST

অতি উৎসাহীরাই সুষ্ঠু নির্বাচনের বারোটা বাজাচ্ছে?


আজ মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন ছিল। মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিনে নির্বাচন আচরণবিধিকে তছনছ করেছেন অনেক অতি উৎসাহী প্রার্থী।

গতকাল আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাওয়া জাতীয় ক্রিকেট দলের অধিনায়ক সাকিব আল হাসান মাগুরায় নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন করে শোডাউন করেছেন এবং এই শোডাউনের বিরুদ্ধে তাকে নির্বাচন কমিশন কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছেন। 

সাকিব আল হাসান ক্রিকেটে যেমন কোনও নিয়ম-কানুন মানেন না, মানেন নি; বিসিবিকে (বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড) বুড়ো আঙুল দেখিয়ে যা খুশি তাই করছেন, ক্রিকেট খেলার মাঝপথে বাংলাদেশে উড়ে এসেছেন, ক্রিকেটারদের ফটোসেশন বাদ দিয়ে বিজ্ঞাপনের শুটিং করতে গেছেন; ঠিক তেমনই রাজনীতিতেও তিনি ডেমকেয়ার মনোভাব দিয়েই যাত্রা শুরু করলেন। যেভাবে তিনি গতকাল (২৯ নভেম্বর) শোডাউন করেছেন তা সুস্পষ্টভাবে আচরণবিধির লঙ্ঘন। 

শুধু সাকিব আল হাসান একা নন। এরকম আচরণ বিধি লঙ্ঘন করছেন নির্বাচনে দাড়ানো বিভিন্ন প্রার্থী। শুধু আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী না, স্বতন্ত্র প্রার্থীরাও শক্তি দেখাতে শোডাউন করছেন। এর ফলে নির্বাচনের আচরণবিধি ভেঙে পড়েছে। নির্বাচন কমিশন শুরুতেই এক ধরনের অসহায়ত্ব প্রকাশ করেছে। অথচ এই নির্বাচন নানা কারণে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। 

গতকাল নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন ঢাকায় ইউরোপিয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত চার্লস হোয়াইটলি। তিনি সুস্পষ্টভাবে বলেছেন যে, বাংলাদেশের আসন্ন সংসদ নির্বাচন গণতান্ত্রিক, বিশ্বাসযোগ্য, শান্তিপূর্ণ ও অংশগ্রহণমূলক হবে বলে সারা বিশ্ব আশা করছে। এই নির্বাচনের দিকে সারা বিশ্ব তাকিয়ে আছে। 

শুধু ইউরোপিয় ইউনিয়ন নয়, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ অন্যান্য দেশগুলোও বাংলাদেশের নির্বাচন কড়া নজরদারিতে রাখছে। নির্বাচন কতটা অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হয়, তার ওপর নির্ভর করছে এই নির্বাচনের গ্রহণযোগ্যতা। এরকম একটি বাস্তবতায় প্রতিটি ধাপে ধাপে নির্বাচনের নিয়ম কানুনগুলো মানা, আচরণবিধি মানা প্রত্যেক প্রার্থীর জন্য অত্যন্ত জরুরি। কিন্তু কয়জন প্রার্থী এই আচরণবিধি এবং অন্যান্য বিষয়গুলো মানছেন তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতেই পারে।

ইতোমধ্যে যারা দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন এবং যারা স্বতন্ত্র হয়েছেন তাদের সবার লক্ষ্য হলো প্রশাসন,  আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে একটা দফারফা করা। তাদেরকে পক্ষে নিয়ে এসে নির্বাচনী বৈতরণী পার হওয়া। ফলে আগামী নির্বাচনে যে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা হবে সেটা এখন থেকেই অনুমান করা যাচ্ছে।

অথচ, এই নির্বাচনের ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুস্পষ্ট একটি গাইডলাইন বা নির্দেশনা আছে। তিনি বলেছেন যে, অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন করতে হবে। এমন একটি নির্বাচন করতে হবে, যে নির্বাচন সকলের কাছে প্রশংসিত হয়। কিন্তু নির্বাচনের শুরু থেকেই কিছু কিছু অতি উৎসাহীদের যে ধরণের আচার-আচরণ, তাতে শেষ পর্যন্ত তারা প্রধানমন্ত্রীর এবং আওয়ামী লীগ সভাপতির সম্মান রক্ষা করবেন কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। 

যদি কোনও কারণে এই সমস্ত অতি উৎসাহীদের অপতৎপরতার জন্য নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ হয়, তাহলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে আওয়ামী লীগ। কিন্তু আওয়ামী লীগের মনোনীত এবং স্বতন্ত্র প্রার্থীরা যেন এখন বেপরোয়া হয়ে গেছেন। তারা যেকোন মূল্যে নির্বাচনে জয়ী হতে চান এবং নির্বাচনে জয়ী হওয়ার জন্য যা করা দরকার সব কিছু করতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন।

এরকম একটি বাস্তবতায় আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে কী পরিস্থিতি তৈরি হয়, তা নিয়েই অনেকে এখন রীতিমতো শঙ্কিত হয়ে উঠেছেন।

Unauthorized use or reproduction of The Finance Today content for commercial purposes is strictly prohibited.


Popular Article from FT বাংলা