May 7, 2024, 1:37 am


বিশেষ প্রতিবেদক

Published:
2023-12-11 22:22:53 BdST

জাতীয় নির্বাচনে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমেজ


নির্বাচন কমিশন ক্রমশ শক্ত হচ্ছে এবং দৃশ্যমান ভাবে নিরপেক্ষ অবস্থান সৃষ্টি করছে। একের পর এক বিভিন্ন জেলা এবং নির্বাচনী এলাকায় ওসি, এসপি এবং ডিসিদেরকে বদলি করেছে। ইতোমধ্যে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের বদলির একটা বিশাল তালিকা জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে দেওয়া হয়েছে।

অতীতে গত দুটি নির্বাচনে যা হয়নি তেমন ঘটনাগুলো ঘটছে। শুধু তাই নয়, নির্বাচন কমিশন বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ প্রার্থী সে যেই হোক না কেন, যখন নির্বাচনের আচরণবিধির ন্যূনতম ব্যত্যয় ঘটাচ্ছে, তাকে তলব করছে এবং কারণ দর্শানোর নোটিশ জারি করছে। ইতোমধ্যে আওয়ামী লীগের হেভিওয়েট নেতাদের মধ্যে আমির হোসেন আমু, বাহাউদ্দিন নাছিম সহ অনেকেই নির্বাচন কমিশনের কারণ দর্শানোর নোটিশ পেয়েছেন।

এদিকে নির্বাচন কমিশন এক পরিপত্র জারি করে বলছে যে, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কোথাও ভীতি প্রদর্শন, চাপ সৃষ্টি করা হলে পুরো আসনের নির্বাচন বাতিল করে দেবে কমিশন। আর এই সমস্ত প্রেক্ষাপটে নির্বাচনে একটি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমেজ তৈরি হয়েছে। 

নিরপেক্ষ বিশ্লেষকরা মনে করছেন, নির্বাচন কমিশন যদি এরকম শক্ত এবং নিরপেক্ষ অবস্থান বজায় রাখতে পারে, তাহলে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে যে সন্দেহ অনীহা গুলো আছে সেই অনীহাগুলো দূর হয়ে যাবে।

নির্বাচন কমিশন দেশের বিভিন্ন জেলায় পুলিশ সুপারকে প্রত্যাহারের নির্দেশ দিয়েছে এবং নির্বাচন কমিশনের সূত্রে জানা গেছে, যে সমস্ত এলাকায় পুলিশ প্রশাসন পক্ষপাতপূর্ণ বা তারা বর্তমান এমপিদের সুপারিশে নিয়োগকৃত বা এলাকায় তারা ন্যূনতম পক্ষপাতপূর্ণ কাজ করছে তাদেরকে প্রত্যাহার করে দিচ্ছে। একইসাথে বেশ কয়েকটি জেলায় জেলা প্রশাসককেও প্রত্যাহার করা হয়েছে। 

নির্বাচন কমিশনের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেছেন, যেখানেই কমিশন অভিযোগ পাচ্ছে এবং সেই অভিযোগের প্রাথমিক প্রমাণ পাচ্ছে সেখানে তারা কোনরকম ছাড় না দিয়ে ওই সংশ্লিষ্ট সরকারি কর্মকর্তাকে প্রত্যাহার করে নিচ্ছে। 

বিশ্লেষকরা বলছেন যে, অন্যান্য সময়ে নির্বাচনের ব্যাপারে একটা রাজনৈতিক চাপ থাকে। বিশেষ করে প্রশাসনের ব্যক্তিরা যেন পক্ষে থাকে সে ব্যাপারে ক্ষমতাসীন দলের একটা আগ্রহ থাকে। এবার সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে এই চাপমুক্ত অবস্থানের ব্যাপারে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। বলা হয়েছে যে, কোন অবস্থাতেই যেন নিরপেক্ষতা ক্ষুণ্ণ না হয়। বিশেষ করে প্রশাসন বা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কোন প্রার্থীর পক্ষে বা বিপক্ষে যেন কাজ না করে তা নিশ্চিত করতে হবে। এরকম বাস্তবতায়  প্রশাসন এবার স্বাধীন এবং স্বাতন্ত্র একটি অবস্থান নিয়েছে।

অন্য সময় নির্বাচন কমিশনের ওপর একটা চাপ থাকে। এবার নির্বাচন কমিশনের মধ্যে সেই চাপ নেই। তাছাড়া নির্বাচন কমিশন এবার বড় ধরনের সুযোগ পেয়েছে। যেহেতু এবার প্রধান দুই দলের একটি অনুপস্থিত সে কারণে নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করার ক্ষেত্রে কোন ঝুঁকি নেই। তবে নির্বাচন কমিশন যেভাবে স্বাতন্ত্র এবং সক্রিয় অবস্থান সৃষ্টি করেছে, এটি পরবর্তী নির্বাচন কমিশনগুলোর জন্য একটি বড় ধরনের ইতিবাচক নির্দেশনা হতে পারে। এর পরবর্তী নির্বাচনগুলোতে এই নির্বাচন কমিশন যেভাবে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়াই প্রশাসনের ব্যাপক রদবদল ঘটিয়েছে তা দৃষ্টান্ত হিসেবে ব্যবহৃত হতে পারে। 

২০০৮ এর নির্বাচনের পর আর কোন নির্বাচনেই প্রশাসনে এত রদবদল হয়নি। নির্বাচন কমিশন বলছে, এটা সবেমাত্র শুরু। আরও রদবদল করা হবে। তাছাড়া প্রশাসন বা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মধ্যে যদি কেউ কোন রকমের পক্ষপাত করেন তাহলে তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণেরও ইঙ্গিত দিচ্ছে কমিশন।

Unauthorized use or reproduction of The Finance Today content for commercial purposes is strictly prohibited.


Popular Article from FT বাংলা