May 3, 2024, 6:05 am


সামিউর রহমান লিপু

Published:
2023-12-20 00:03:53 BdST

‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ স্লোগানে গুরুত্ব পাচ্ছে পাঁচ বিষয়চমক নিয়ে আসছে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহার


আগামী ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হবে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। দলের প্রার্থিতা চূড়ান্ত করা থেকে শুরু করে সব ধরনের প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে ক্ষমতাসীনরা। এখন প্রতিশ্রুতির পালা।

আগামী পাঁচ বছর ক্ষমতায় থাকলে জনগণকে কী কী উপহার দেওয়া হবে— সে বিষয়ে বিস্তারিত তুলে ধরতে আগামী ২৭ ডিসেম্বর ‘নির্বাচনী ইশতেহার’ প্রকাশ করবে আওয়ামী লীগ।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এবারের নির্বাচনে প্রার্থীদের মতো ইশতেহারেও চমক দেখাতে চান ক্ষমতাসীনরা। ১৫ বছর আগের ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ থেকে ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ গড়ার প্রত্যয়ে এই নির্বাচনী ইশতেহার প্রকাশ করা হতে পারে। 

দলীয় সূত্র মতে, ইশতেহারে বিগত নির্বাচনে দেওয়া প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের হিসাব-নিকাশ যেমন থাকবে, তেমনি থাকবে নতুন নতুন চমক। ইতোমধ্যে দলীয় ইশতেহার প্রায় চূড়ান্ত করেছে আওয়ামী লীগ।

তিন দফা বৈঠক করে ইশতেহারের খসড়া চূড়ান্ত করেছে কমিটি। ইশতেহার প্রণয়ন কমিটির কাজ শেষে তা দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনার কাছে পাঠানো হয়েছে। তার নির্দেশনা অনুযায়ী কিছু সংযোজন-বিয়োজন এবং তথ্য হালনাগাদের কাজ চলছে।

২০০৮ সালে ‘দিন বদলের সনদ’ শিরোনামে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন দেখিয়ে ক্ষমতায় আসে আওয়ামী লীগ। এরপর ২০১৪ সালেও ‘এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ’ শিরোনামে ১০টি মেগাপ্রকল্প বাস্তবায়নের প্রতিশ্রুতি দিয়ে টানা দ্বিতীয়বার ক্ষমতারোহণ করে দলটি। একইভাবে ২০১৮ সালে ‘সমৃদ্ধির অগ্রযাত্রায় বাংলাদেশ’ শিরোনামে ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ ও ২১০০ সালের মধ্যে নিরাপদ ব-দ্বীপ গড়ে তোলার পরিকল্পনা দেওয়া হয়।

এবারের লক্ষ্য ‘স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণ’। এজন্য চারটি মৌলিক স্তম্ভ ঠিক করা হয়েছে- স্মার্ট নাগরিক, স্মার্ট সোসাইটি, স্মার্ট ইকোনমি ও স্মার্ট সরকার প্রতিষ্ঠা। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে প্রণীত আওয়ামী লীগের ইশতেহারে এ নিয়ে বিশদ কর্মসূচি ও প্রতিশ্রুতি থাকছে।

এবারের ইশতেহারে দেশকে ‘স্বয়ংসম্পূর্ণ’ করতে নানা পরিকল্পনাসহ পাঁচটি বিষয় গুরুত্ব পাচ্ছে। এর মধ্যে রয়েছে সর্বত্র প্রযুক্তির ব্যবহার নিশ্চিতকরণ, কৃষিতে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন, তরুণদের কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং বিনিয়োগ আকৃষ্ট ও শিল্পোন্নয়নের রোডম্যাপ।

চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের উপযোগী জনবল গড়ে তোলার উপর সর্বাধিক গুরুত্ব দিচ্ছে আওয়ামী লীগ এবং সেটা ঘিরে অর্থনীতির শক্ত ভিতের ওপর দেশকে দাঁড় করানোর উচ্চবিলাসী লক্ষ্য নির্ধারণ করে কর্মসূচি নিচ্ছে দলটি।

আওয়ামী লীগের ইশতেহারে এবার আরও থাকছে স্বয়ংসম্পূর্ণ বাংলাদেশ গঠন, বিদেশনির্ভরতা কমানো এবং বিদেশি ষড়যন্ত্র মুক্ত থাকতে নানা কর্মসূচি।

এবারের নির্বাচনী ইশতেহারে সুশাসন থেকে শুরু করে সকল বিষয়, যেমন- আইনের শাসন, পরিবেশ সুরক্ষা, জ্বালানি সংকট মোকাবিলাসহ সবকিছু থাকছে।

এবারের ইশতেহারে ব্যাংকিংখাতসহ অন্য ইস্যুতে কীভাবে প্রাতিষ্ঠানিক শৃঙ্খলা আনা যায়, সেটি তুলে ধরবে আওয়ামী লীগ। গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থা, অসাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র আরও কীভাবে সুদৃঢ় করা যায়, তার সুনির্দিষ্ট সুপারিশ সেখানে থাকবে।’

ইশতেহার প্রণয়নে এবারই প্রথম গণমানুষের মতামত নিয়েছে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। এ ছাড়া, জেলা-উপজেলা পর্যায়ে দলটির যারা কমিটিতে রয়েছেন তাদের মাধ্যমে কৃষক, শ্রমিকসহ নানা পেশাজীবী মানুষ, স্থানীয় পর্যায়ের ব্যবসায়ীসহ সবার মতামত নিয়ে এই ইশতেহার তৈরি করা হচ্ছে বলে একাধিক সূত্র এফটি টীমকে নিশ্চিত করেছে।

আওয়ামী লীগের ইশতেহার প্রণয়ন উপকমিটির আহ্বায়ক ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘আমরা এবারের ইশতেহারে সাধারণ জনগণ ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের মতামত নিয়েছি। এবারের ইশতেহারে অর্থনীতির অবকাঠামো, কৃষি, শিক্ষা, তথ্যপ্রযুক্তি এবং বিদ্যুতের উৎপাদন ও উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি; নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য ও মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণসহ সীমিত আয়ের মানুষের কষ্ট লাঘবে যথাযথ উদ্যোগ এবং এসব বিষয়ে সুস্পষ্ট ধারণা তুলে ধরা হবে।’

আওয়ামী লীগের একাধিক শীর্ষ নেতা বলেছেন, 'আমাদের রাজনৈতিক অঙ্গীকার হলো আগামীর বাংলাদেশকে স্মার্ট বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে তোলা। স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তোলা মানে হলো- রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থার মধ্য দিয়ে সরকারি সেবাগুলো জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেওয়া, জবাবদিহিমূলক প্রশাসন গড়ে তোলা এবং মানুষের স্বাভাবিক যে জীবনযাত্রা তা আরো মসৃণ করা। এসব লক্ষ্যে একটি সমাজ ও রাষ্ট্রব্যবস্থা গড়ে তোলার জন্য বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ইশতেহার প্রণীত হচ্ছে।’

গত ২৭ সেপ্টেম্বর আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহার উপকমিটি গঠন করা হয়। দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ড. আবদুর রাজ্জাককে আহ্বায়ক এবং তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক ড. সেলিম মাহমুদকে সদস্য সচিব করা হয়। ইশতেহার কমিটির সদস্যদের মধ্যে রয়েছেন- ড. মসিউর রহমান, ড. অনুপম সেন, ড. সাত্তার মন্ডল, ড. বজলুল হক খন্দকার, অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক, ড. শামসুল আলম, ডা. দীপু মনি এমপি, ড. হাছান মাহমুদ এমপি, অ্যাডভোকেট শ ম রেজাউল করিম এমপি, শেখর দত্ত, ড. মাকসুদ কামাল, ড. মাহফুজুর রহমান, অধ্যাপক খায়রুল হোসেন, অধ্যাপক সাদেকা হালিম, সাজ্জাদুল হাসান এমপি, অ্যাডভোকেট তারানা হালিম, ওয়াসিকা আয়েশা খান এমপি, ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, জুনায়েদ আহমেদ পলক এমপি, ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল এমপি, অধ্যাপক মোহাম্মদ এ আরাফাত এমপি, অ্যাডভোকেট সায়েম খান, সাদিকুর রহমান চৌধুরী ও সাব্বির আহমেদ এফসিএ।

Unauthorized use or reproduction of The Finance Today content for commercial purposes is strictly prohibited.


Popular Article from FT বাংলা