April 30, 2024, 12:08 am


বিশেষ প্রতিবেদক

Published:
2024-04-07 10:05:20 BdST

পার্বত্য চট্টগ্রাম নিয়ে ভয়ঙ্কর ষড়যন্ত্র


আবারও ভয়ঙ্কর হয়ে উঠেছে পার্বত্য চট্টগ্রাম। সাম্প্রতিক সময়ে কেএনএফের বিভিন্ন স্থানে হামলা এবং সশস্ত্র তৎপরতা এলাকায় কেবল উদ্বিগ্ন সৃষ্টি করেনি, পার্বত্য এলাকার ভবিষ্যৎ নিয়েও শঙ্কা সৃষ্টি করেছে।

যদিও র‌্যাবের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, কেএনএফ নির্মূল না হওয়া পর্যন্ত অভিযান চলবে। কিন্তু এই অভিযান আদৌ শেষ হবে কিনা তা নিয়েও কারও কারও মধ্যে সন্দেহ তৈরি হয়েছে৷

একটা সময় শান্তিবাহিনী যেভাবে পার্বত্য অঞ্চলে বিদ্রোহ এবং বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেছিল ঠিক তেমনিভাবে এখন কেএনএফ একই কাণ্ড করতে চাইছে বলে অনেকে মনে করছেন।

র‌্যাবের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, দুটি কারণে তারা এই ধরনের সশস্ত্র তৎপরতা করছে। একটা হল, টাকার প্রয়োজনে তারা লুটপাট এবং অস্ত্র ছিনতাই করছে। আর দ্বিতীয়ত, সক্ষমতা প্রদর্শন করার জন্য তারা এই ধরনের ঘটনা ঘটাচ্ছে।

কিন্তু কোন কোন বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই দুই ঘটনার বাইরেও কেএনএফের সুদূরপ্রসারী তৎপরতা রয়েছে। শুধুমাত্র টাকা-পয়সার জন্য বা শক্তি প্রদর্শনের জন্য তারা এই ধরনের ঘটনা ঘটাচ্ছে এটি বিশ্বাস করার মতো কোনও কারণ নেই। তার এর পিছনে রয়েছে জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক তৎপরতা।

দীর্ঘদিন ধরেই পার্বত্য চট্টগ্রামকে বিচ্ছিন্ন করার একটা ষড়যন্ত্র ছিল এবং সেই ষড়যন্ত্রের অংশ ছিল শান্তিবাহিনী। এখন শান্তি বাহিনীর বদলে কেএনএফ সেই জায়গা নিয়েছে। কেএনএফের এই আন্দোলনটি আদৌ বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলন কি না সেটা খতিয়ে দেখা দরকার। এবং এমন একটি সময়ে বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলন শুরু হয়েছে। যখন পার্বত্য এলাকার পাশেই মিয়ানমারে একটি অশান্ত পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে এবং রাখাইন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার লক্ষে আরাকান আর্মিরা তৎপরতা চালাচ্ছে। ঠিক সেইসময় কেএনএফের এই তৎপরতা নতুন মাত্রা যোগ করেছে।

অনুসন্ধানে দেখা গেছে, মিজোরামে এই কেএনএফ প্রশিক্ষণ নিচ্ছে এবং মিজোরামের বিচ্ছিন্নতাবাদীদের সাথে তাদের একটি সম্পর্ক রয়েছে। আরাকান আর্মি বা আরাকানের বিচ্ছিন্নতাবাদী সশস্ত্র গ্রুপগুলোর সঙ্গে কেএনএফের সম্পর্ক আছে কি না, সেটা খতিয়ে দেখা দরকার। আর স্বাধীন আরাকান রাজ্য প্রতিষ্ঠার সঙ্গে যারা যুক্ত তাদের সঙ্গে কেএনএফের কোনো সম্পর্ক আছে কিনা সেটিও এখন খতিয়ে দেখা দরকার।

বাংলাদেশের চট্টগ্রাম পার্বত্য অঞ্চল নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে ষড়যন্ত্র ছিল এবং এই জন্যই এখানে অস্থিরতা সৃষ্টির চেষ্টা করা হয়েছিল। পার্বত্য চট্টগ্রামকে আলাদা করার জন্য ষড়যন্ত্র নতুন নয় এবং শান্তি বাহিনী এই ধরনের চেষ্টা দীর্ঘ সময় করেছিল এবং তাদের পেছনে আন্তর্জাতিক মদত ছিল। এখন কেএনএফ কে কারা মদত দিচ্ছে, কারা অস্ত্র সরবরাহ করছে, কারা অর্থ দিচ্ছে, তা খুঁজে বের করা দরকার।

পার্বত্য চট্টগ্রামকে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের হাত থেকে মুক্ত করতে হবে এবং এজন্য তাদের মূল লক্ষ্য এবং উদ্দেশ্য খুঁজে বের করতে হবে। সাথে সাথে এদেরকে কারা মদত দিচ্ছে এরা কোথা থেকে প্রশিক্ষণ পাচ্ছে এবং কিভাবে সংগঠিত হচ্ছে সেটিও খুঁজে বের করতে হবে। নিছক টাকার জন্য বা শক্তি প্রদর্শনের জন্য কেএনএফ হামলা করেনি।

পার্বত্য চট্টগ্রামকে বিচ্ছিন্ন করার জন্য যে সশস্ত্র গোষ্ঠী আগে থেকে তৎপর ছিলো এটি তাদেরই একটি ধারাবাহিকতা। পার্বত্য টট্টগ্রাম নিয়ে যে ভয়ংকর ষড়যন্ত্র চলছে তা নিয়ে এখন থেকেই সরকারকে সজাগ-সচেতন হতে হবে এবং এই ষড়যন্ত্র নস্যাৎ-এর কৌশল তৈরি করতে হবে।

Unauthorized use or reproduction of The Finance Today content for commercial purposes is strictly prohibited.


Popular Article from FT বাংলা