April 29, 2024, 7:16 am


বিশেষ প্রতিবেদক

Published:
2024-01-13 02:46:24 BdST

মন্ত্রিসভার সাফল্য যাদের ওপর সবচেয়ে বেশি নির্ভর করছে


গতকাল নতুন মন্ত্রিসভা গঠন হয়েছে। মন্ত্রিসভা গঠনের পর দপ্তরও বণ্টন করা হয়েছে। দপ্তর বণ্টনে বেশ চমক ছিল। আর কিছু স্পর্শকাতর গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ে এমন ব্যক্তিদেরকে দেওয়া হয়েছে যাদের ওপর নির্ভর করছে সরকারের সাফল্যের অনেক কিছুই।

নতুন মন্ত্রিসভায় প্রধানমন্ত্রী ছয়টি দপ্তর রেখেছেন। ধারণা করাই যাচ্ছে যে, প্রধানমন্ত্রী আস্তে আস্তে মন্ত্রিসভার পরিধি বাড়াবেন। তিনি সবগুলো মন্ত্রণালয় দেখভাল করেন এবং তার নির্দেশেই, তার চিন্তায় এবং পরিকল্পনায় রাষ্ট্র পরিচালিত হয়। এই নিয়ে কোন সন্দেহ নেই।

তবে তার নির্দেশনাগুলো যারা বাস্তবায়ন করবেন সেক্ষেত্রে মন্ত্রীদের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। মন্ত্রীরা যদি সঠিক এবং সুষ্ঠুভাবে দায়িত্ব পালন করেন তাহলে সরকারের সাফল্য আসবে। 

বিগত পাঁচ বছরে কিছু কিছু মন্ত্রীর দায়িত্বহীনতা, ব্যর্থতার কারণে সরকারের অনেক অর্জন ম্লান হয়ে গিয়েছিল। এ বার যেন সেরকম পরিস্থিতির সৃষ্টি না হয়, সেটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, সরকারের সামনে যে চ্যালেঞ্জগুলো রয়েছে তাতে পাঁচজন মন্ত্রীর ভূমিকা এখানে খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

এই পাঁচজনের মধ্যে সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা হল আবুল হাসান মাহমুদ আলী। তিনি ২০১৪ থেকে ২০১৮ সালে আওয়ামী লীগ সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ছিলেন। এ বার অর্থমন্ত্রী হিসেবে তার অন্তর্ভুক্ত একটি বড় চ্যালেঞ্জ।

সাধারণত অর্থ মন্ত্রণালয় অর্থনীতিবিদ বা অর্থনীতি বিষয়ের বিশেষজ্ঞ এমন ব্যক্তিদেরকেই রাখা হয়। শাহ কিবরিয়া বা আবুল আল মুহিত, এমনকী লোটাস কামাল একজন চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট ছিলেন। এর আগে বিএনপির আমলেও সাইফুর রহমান অর্থনীতি থেকেই রাজনীতির জগতে এসেছিলেন। কিন্তু এবার আবুল হাসান মাহমুদ আলী একজন পেশাদার কূটনীতিক। অর্থ মন্ত্রণালয়ের মতো স্পর্শকাতর মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব নিয়েছেন। এমন এক সময় তিনি এই দায়িত্ব নিয়েছেন যখন অর্থনীতি ধুকছে।

তবে একজন সৎ, বিচক্ষণ এবং কূটনীতিক হিসেবে তার অনেক সুনাম রয়েছে। তিনি এই মন্ত্রণালয় কীভাবে সামাল দেন, তার ওপর নির্ভর করছে অনেক কিছু। তাকে অর্থনীতিতে শৃঙ্খলা যেমন ফিরিয়ে আনতে হবে, তেমনি বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ, অর্থ পাচার বন্ধ, খেলাপি ঋণের ঊর্ধ্বগতি কমাতে হবে। এই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় তিনি কতটুকু সাফল্য অর্জন করেন তার ওপর নির্ভর করছে সরকারের সাফল্যের অনেকখানি। 

এবারের মন্ত্রিসভার আরেকটি বড় চমক ছিল বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে কোন পূর্ণাঙ্গ মন্ত্রী এখন পর্যন্ত দেওয়া হয়নি। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী হয়েছেন টাঙ্গাইল-৬ আসন থেকে নির্বাচিত আহসানুল ইসলাম টিটু।

এই মন্ত্রণালয়টি অত্যন্ত স্পর্শকাতর। বিশেষ করে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, বাজারে সিন্ডিকেটের এক ভয়াবহ অবস্থা বিগত পাঁচ বছর ধরে জনজীবনকে অতিষ্ঠ করে তুলেছে। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি নিয়ে মানুষের অন্তহীন অভিযোগ।

এরকম বাস্তবতায় টিটু বাণিজ্যমন্ত্রী হিসেবে কতটুকু সামাল দিতে পারবেন সেটি দেখার বিষয়। এখানে কোন পূর্ণাঙ্গ মন্ত্রী দেওয়া হয় কিনা সেটির অপেক্ষাও করছেন অনেকে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের  সাফল্যের ওপর সরকারের সাফল্য অনেকখানি নির্ভর করছে। 

একইভাবে পরিকল্পনামন্ত্রীর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে আব্দুস সালামকে। তিনিও নতুন মন্ত্রী এবং পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে একটি টেকনিক্যাল মন্ত্রণালয়। এই মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব সফলভাবে পালনের ওপর নির্ভর করছে বাংলাদেশের অর্থনীতির অনেক কিছুই। দেখার বিষয় যে তিনি কতটুকু দায়িত্ব পালন করতে পারেন।

এবারের মন্ত্রিসভায় যাকে নিয়ে সবচেয়ে বেশি আশাবাদ তৈরি হয়েছে তিনি হলেন ড. হাছান মাহমুদ। তাকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

বিগত পাঁচ বছরে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ছিল সরকারের বড় অস্তস্তির কারণ। বেফাঁস বিভিন্ন মন্তব্যের মাধ্যমে পররাষ্ট্রমন্ত্রী পুরো জাতির জন্য একটি বিরক্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন। সেখানে হাছান মাহমুদের মতো একজন পরিচ্ছন্ন এবং কূটনীতিতে দক্ষ ব্যক্তিকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

তিনি নির্বাচন পরবর্তী বিশ্ব রাজনীতিতে বাংলাদেশকে কীভাবে উপস্থাপন করেন তার ওপর সরকারের সাফল্য অনেকখানি নির্ভর করছে। 

মূলত এই কয়েকজন মন্ত্রী কীভাবে মন্ত্রণালয় পরিচালনা করেন তার ওপর সরকারের সাফল্য অনেক খানি নির্ভরশীল বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

Unauthorized use or reproduction of The Finance Today content for commercial purposes is strictly prohibited.


Popular Article from Spot Light