May 3, 2024, 2:30 pm


বিশেষ প্রতিবেদক

Published:
2024-01-29 09:07:40 BdST

স্বতন্ত্রদের আওয়ামী লীগে ফেরা হচ্ছে না


স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য হিসেবে যে ৬২ জন এবার নির্বাচিত হয়েছিলেন, তাদের মধ্যে ৫৮ জনই কোন না কোনভাবে আওয়ামী লীগের সঙ্গে যুক্ত। তারা আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা।

এদের প্রত্যাশা ছিল স্বতন্ত্র হিসেবে জয়ী হলেও পরে আওয়ামী লীগে আত্তীকরণ ঘটবে তাদের। আওয়ামী লীগের এমপি হিসেবে তারা সংসদে থাকতে চেয়েছিলেন।

রোববার গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ৬২ জন স্বতন্ত্র সংসদ সদস্যদেরকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। এই অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন জাতীয় সংসদের চিফ হুইপ।

এই অনুষ্ঠানের স্বাগত ভাষণে প্রধানমন্ত্রী যে বক্তব্য দিয়েছেন তাতে সুস্পষ্ট হল, স্বতন্ত্রদের আওয়ামী লীগে ফেরা হচ্ছে না। বরং স্বতন্ত্র হিসেবে জাতীয় সংসদে তাদেরকে দায়িত্ব পালন করতে হবে।

প্রধানমন্ত্রী স্বতন্ত্রদেরকে বিভিন্ন বিষয়ে পরামর্শ এবং নির্দেশনা দিয়েছেন। সংবিধান এবং সংসদের কার্যপ্রণালী বিধি সম্পর্কে তাদেরকে পড়াশোনা করার জন্য পরামর্শ দিয়েছেন। সংসদে যেন তারা গঠনমূলক ভূমিকা পালন করে সেজন্য নির্দেশনা দিয়েছেন।

পাশাপাশি তাদের নিজ নিজ নির্বাচনী এলাকায় আশ্রয়ণ প্রকল্প এবং দুর্নীতির বিরুদ্ধে তারা যেন রুখে দাঁড়ান সেই বার্তা দিয়েছেন। এর মাধ্যমে স্পষ্ট হল স্বতন্ত্রদেরকে স্বতন্ত্র অবস্থানেই থাকতে হবে।

আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চেয়ে যারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছিলেন, তাদের প্রায় সবাই আওয়ামী লীগের ভিতরে আসতে চেয়েছিলেন এবং তারা ধারণা করেছিলেন আওয়ামী লীগ হয়তো তাদেরকে দলে টেনে নেবে। এর আগেও এ ধরনের ঘটনা ঘটেছে। যারা স্বতন্ত্র হিসেবে নির্বাচিত হয়েছিলেন তাদেরকে আওয়ামী লীগ ঘরে ফিরিয়ে এনেছিল। কিন্তু এবার ঘরের ছেলেদের ঘরে ফেরাটা অনিশ্চিত হয়ে পড়ল।

তবে স্বতন্ত্র সংসদ সদস্যদের কেউ কেউ এখনও আশাবাদী। তারা মনে করছেন, সামনের দিনগুলোতে স্বতন্ত্রদের একটা অবস্থান হবে এবং আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগ এই স্বতন্ত্রদের বিজয়কে মাথায় রাখবে।

আওয়ামী লীগ স্বতন্ত্রদের ব্যাপারে একটি কৌশলগত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। এবার জাতীয় সংসদে বিরোধী দলের সদস্য মাত্র ১১ জন। জাতীয় পার্টির এই ১১ জন সংসদ সদস্য নিয়েই বিরোধী দল গঠন করেছে। ইতোমধ্যে জি এম কাদেরকে বিরোধী দলের নেতা এবং আনিসুল ইসলাম মাহমুদকে উপনেতা করে প্রজ্ঞাপন জারি হয়েছে।

এরকম বাস্তবতায় জাতীয় পার্টি এবার সংসদে একমাত্র বিরোধী দলের ভূমিকা পালন করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে স্বতন্ত্রদের মধ্যে কেউ কেউ জাতীয় সংসদে সরকারের গঠনমূলক সমালোচনা করবেন এমন ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে৷

বিশেষ করে বিএনপি থেকে বহিষ্কৃত নেতা একরামুজ্জামান, কল্যাণ পার্টির নেতা সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম সহ বেশ কয়েকজন স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য এবার জাতীয় সংসদে পৃথক অবস্থান নেবেন।

তবে একেবারে আওয়ামী লীগের যারা মাঠ পর্যায়ের নেতা তারা জাতীয় সংসদে কি ভূমিকা নিবেন তা নিয়ে দ্বিধান্বিত। তবে আওয়ামী লীগ জাতীয় সংসদকে প্রাণবন্ত এবং কার্যকর দেখতে চায়। এক্ষেত্রে স্বতন্ত্রদের সক্রিয় ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূরণ। 

আওয়ামী লীগের শীর্ষ পর্যায়ের নেতারা বলছেন, এই কারণেই প্রধানমন্ত্রী স্বতন্ত্রদেরকে গণভবনে ডেকেছেন এবং জাতীয় সংসদে তাদের ভূমিকার ব্যাপারে একটা সুস্পষ্ট নির্দেশনা দিয়েছেন।

আগামী মঙ্গলবার থেকে জাতীয় সংসদ অধিবেশন বসছে। এখানে স্বতন্ত্ররা কি আলাদা আলাদা ভাবে অবস্থান নিবেন নাকি তাদের একটি গোষ্ঠীবদ্ধ অবস্থান দেখা যাবে তা বুঝা যাবে সংসদ অধিবেশন শুরুর পরে।

Unauthorized use or reproduction of The Finance Today content for commercial purposes is strictly prohibited.


Popular Article from Spot Light