বিশেষ প্রতিবেদক
Published:2025-02-10 19:59:45 BdST
বিষুর উপর সন্ত্রাসী হামলার নেপথ্যে আধিপত্য বিস্তার ও চাঁদাবাজিমালিবাগে যুবদল নেতার বিরুদ্ধে আওয়ামী সন্ত্রাসীদের পুনর্বাসনের অভিযোগ
মালিবাগে যুবদল নেতার বিরুদ্ধে আওয়ামী সন্ত্রাসীদের পুনর্বাসনের অভিযোগ
বিষুর উপর সন্ত্রাসী হামলার নেপথ্যে আধিপত্য বিস্তার ও চাঁদাবাজি
আধিপত্য বিস্তার ও চাঁদাবাজিকে কেন্দ্র করে রামপুরা থানা যুবদলের আহ্বায়ক কামাল আহমেদ দুলু ভাড়াটে সন্ত্রাসীদের দিয়ে ঢাকা মহানগর উত্তর রামপুরা থানাধীন ২৩ নং ওয়ার্ড বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মো. রুবেল হক বিশু ব্যাপারীর ওপর অতর্কিত হামলা চালিয়ে গুরুতর আহত করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
গত ৩ ফেব্রুয়ারি রাত ৮টার দিকে রাজধানীর মালিবাগ বাজার রোডে রুপালি ক্লাবের সামনে এই হামলার ঘটনা ঘটে।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, দুলুর নির্দেশে স্থানীয় চিহ্নিত সন্ত্রাসী ডিম মনা, তালাত, কেরেচ্ছা আলম, মাসুম খানসহ অজ্ঞাত আরও ৪-৫জন দেশীয় ও ধারালো অস্ত্র নিয়ে অতর্কিতে বিষুর উপর এই হামলা চালায়। তারা বিশুকে বেধড়ক পিটিয়ে জখম করে পালিয়ে যায়। এসময় বিশু মাটিতে লুটিয়ে পড়লে স্থানীয় জনতা তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়।
এই ন্যাক্কারজনক হামলার ঘটনায় বুধবার রামপুরায় নিজ বাসায় সংবাদ সম্মেলন করেছেন আহত বিএনপি নেতা বিশু। এসময় বিষুর পরিবার সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।
আহত বিএনপি নেতা বিশু বলেন, ‘আমি রামপুরা থানাধীন ২৩নং ওয়ার্ড বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকাকালীন আমি ১১৬টি মামলার আসামি হয়েছি। গত ১৭ বছরে ১৭ দিনও বাসায় থাকতে পারিনি। বছরের পর বছর জেল খেটেছি। কত নির্যাতন ও নিপীড়নের স্বীকার হয়েছি তা বলে শেষ করা যাবে না। দলের নেতাদের ধরিয়ে দিতে অনেকবার চাপ দিয়েছে, প্রলোভন দেখিয়েছে, নির্যাতন করেছে। কিন্তু শত নির্যাতন স্বত্বেও আমাকে ন্যায় ও নীতির পথ থেকে কেউ কোনদিন হঠাতে পারেনি।
তিনি বলেন, বর্তমানে বিএনপি ক্ষমতায় না এলেও এখন আমরা স্বাধীন হয়েছি, স্বাধীনভাবে চলতে পারি। আমার রাজনীতির পথপ্রদশর্ক, আমার নেতা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের কঠোর নির্দেশনা আছে যে, এলাকায় কোনো ধরনের সন্ত্রাসী কর্মকান্ড, চাঁদাবাজি, দখলবাজি করা যাবে না, কাউকে করতেও দেওয়া যাবে না। সেই পথে আমি হাঁটতে গিয়ে আজ নির্যাতিত নিপীড়িত।’
হামলার বিষয়ে বিশু বলেন, ‘গত ১ ফেব্রুয়ারি রামপুরা থানা যুবদলের আহ্বায়ক কামাল আহমেদ দুলু ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের নিয়ে মালিবাগ কমিউনিটি সেন্টারের উল্টো পাশে সিএনজি স্ট্যান্ড দখল করতে গেলে আমি বাঁধা দেই। সেই কারণে গত ৩ ফেব্রুয়ারি মালিবাগ বাজাররোড রুপালি ক্লাবের পাশে মাংসের দোকানের সামনে আমাকে একা পেয়ে তার ক্যাডার বাহিনী দিয়ে আমার উপর এই নৃশংস হামলাটি করান।’
তিনি আরও বলেন, যুবদল নেতা দুলু নিজের আধিপত্য বিস্তারে ২৩ নং ওয়ার্ডের বিভিন্ন এলাকায় আওয়ামী লীগের নেতাদের আশ্রয় প্রশ্রয় দিচ্ছেন। শুধুমাত্র নিজের অনুসারীদের দল ও এর বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠনের কমিটির পদে বসিয়েছেন।
বিষুর বড় বোন এই বর্বরোচিত হামলার তীব্র নিন্দা জানান। এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করতে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রতি আহবান জানান তিনি।
বিষু এই প্রতিবেদককে বলেন, এটি কোন বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। গত কিছুদিন ধরে যুবদলের দুয়েকজন নেতা ধরাকে সরা জ্ঞান করছেন। এলাকায় নিজের আধিপত্য বজায় রাখতে আওয়ামী লীগের চিহ্নিত সন্ত্রাসীদের দলে আশ্রয় দিচ্ছেন। এগুলো কোনভাবেই বরদাশত করা হবে না।
তিনি দলের হাইকমান্ডের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের স্পষ্ট নির্দেশ দিয়েছেন যে দলে কোন সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজকে রাখা যাবে না। কেউ দলের নাম ব্যবহার করে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে যুক্ত হলে দল থেকে বহিস্কার করতে হবে।
মামলা সংক্রান্ত বিষয়ে তার অভিযোগ, ‘রামপুরা থানায় দুলুর বিরুদ্ধে মামলা করতে গেলে সেখানকার ওসি মো. আতাউর দুলুর নাম বাদ দিয়ে মামলা দিতে বলেন এবং মিলেমিশে কাজের অনুরোধ করেন। পরবর্তীতে ডিমমনা, তালাত, কেরেচ্ছা আলম, মাসুম খানসহ অজ্ঞাত আরও ৪-৫জনের নাম দিয়ে মামলা নেন তিনি।
এই বিষয়ে রামপুরা থানার ওসি আতাউর রহমান বলেন, ‘বাদীপক্ষ এজাহারে যাদের নাম দিয়েছে আমরা তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছি। কয়েকদফা অভিযান চালানো হয়েছে কিন্তু এখন পযর্ন্ত কোনো আসামিকে ধরা যায়নি।’
উল্লেখ্য, গত ৯ অক্টোবর দুলু খিলগাঁওয়ের তালতলা মার্কেট নিজস্ব লোকজন নিয়ে দখল করতে গেলে সেখানকার লোকজন বাধা দেয়। তারই জেরে দুলুর লোকজন স্থানীয় বিএনপি ও ছাত্রদলের বেশ কয়েকজন নেতাকর্মীকে চাপাতি দিয়ে কোপায়। সেই ঘটনায় খিলগাঁও থানায় আসাদুজ্জামান রিপন (৩৬) নামে এক ব্যক্তি দুলুকে ১৮ নং আসামি করে ৪০ জনসহ ১৫০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে খিলগাঁও থানায় একটি চাঁদাবাজির মামলা করেন।
এদিকে, অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে কামাল আহমেদ দুলু বলেন, ‘আমি সামনে কাউন্সিলর নির্বাচন করব। এই কারনে আমার বিরুদ্ধে একটা মহল অপপ্রচার করছে।’
Unauthorized use or reproduction of The Finance Today content for commercial purposes is strictly prohibited.
