নিজস্ব প্রতিবেদক
Published:2025-12-21 00:28:52 BdST
৬ ভাই-বোনের ‘হাদি পরিবারে’ কে কী করেন
ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শহীদ শরীফ ওসমান বিন হাদির পরিবার মূলত আলেম ও শিক্ষাবিদদের পরিবার। ছয় ভাই-বোনের এই পরিবারে প্রায় সবাই ধর্মীয় শিক্ষা ও শিক্ষকতার সঙ্গে জড়িত।
ছোটবেলা থেকেই কোরআন-হাদিসের শিক্ষায় বেড়ে ওঠা ওসমান হাদি ছিলেন আধিপত্যবাদবিরোধী আন্দোলনের সম্মুখ সারির একজন কর্মী। দুর্বৃত্তদের গুলিতে প্রাণ হারিয়ে তিনি এখন শহীদ।
ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার খাসমহল এলাকায় জন্ম ওসমান হাদির। তার বাবা মাওলানা আব্দুল হাদি ছিলেন একজন মাদ্রাসা শিক্ষক।
বড় ভাই মাওলানা আবু বক্কর ছিদ্দিক বরিশালের গুঠিয়ার একটি জামে মসজিদের ইমাম ও খতিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। মেঝ ভাই মাওলানা ওমর ফারুক ঢাকায় ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত।
ওসমান হাদির তিন বোনের স্বামীরাও শিক্ষকতা ও দ্বীনি শিক্ষার সঙ্গে জড়িত। বড় বোনের স্বামী মাওলানা আমির হোসেন নলছিটি ফুলহরি আব্দুল আজিজ দাখিল মাদ্রাসার সুপার এবং একটি মসজিদের ইমাম। মেঝো বোনের স্বামী মাওলানা আমিরুল ইসলাম ঢাকায় ব্যবসা করেন। ছোট বোনের স্বামী মাওলানা মনির হোসেন নলছিটি ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসায় শিক্ষকতা করছেন।
শিক্ষাজীবনে ওসমান হাদি ঝালকাঠির এন এস কামিল মাদ্রাসায় পঞ্চম শ্রেণি থেকে আলিম পর্যন্ত পড়াশোনা করেন। পরে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগে ভর্তি হন। তিনি ২০১০–১১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। মেধাবী এই শিক্ষার্থী জীবিকার তাগিদে প্রাইভেট পড়াতেন। সবশেষ তিনি একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করেছেন।
ঝালকাঠির এন এস কামিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা গাজী মুহাম্মদ শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘হাদি ছাত্রজীবন থেকেই অসম্ভব মেধাবী ছিলেন। তিনি ছিলেন সুবক্তা এবং অন্যায়ের বিরুদ্ধে সোচ্চার।’
হাদির বড় ভাইয়ের ভূমিকা প্রসঙ্গে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী জুনায়েদ মাসুদ লিখেছেন, ইনকিলাব মঞ্চের কার্যক্রমে ব্যাকস্টেজে সবচেয়ে বেশি মেধা ও শ্রম দিয়েছেন শরিফ উমর বিন হাদি। তিনি সংগঠনের পরিকল্পনা, সমন্বয় ও ব্যবস্থাপনায় পালন করেছেন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা।
উল্লেখ্য, গত ১২ ডিসেম্বর দুপুর ২টা ২৪ মিনিটে জুমার নামাজ আদায় করে রাজধানীর বিজয়নগর পানির ট্যাংকির সামনে রিকশায় করে যাওয়ার সময় ওসমান হাদির ওপর হামলা হয়। মোটরসাইকেলে করে আসা দুই দুর্বৃত্ত খুব কাছ থেকে তাকে গুলি করে পালিয়ে যায়।
গুরুতর আহত অবস্থায় প্রথমে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এবং পরে এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয়। উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে সিঙ্গাপুরে পাঠানো হলেও শেষ পর্যন্ত চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৮ ডিসেম্বর রাতে তিনি ইন্তেকাল করেন।
শহীদ ওসমান হাদির মৃত্যুতে রাজনৈতিক ও সামাজিক অঙ্গনে গভীর শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
Unauthorized use or reproduction of The Finance Today content for commercial purposes is strictly prohibited.
