April 20, 2024, 4:05 am


আবু তাহের বাপ্পা

Published:
2020-08-23 07:37:54 BdST

রিজেন্ট কেলেঙ্কারি: ফেঁসে যাচ্ছেন আজাদ


রিজেন্ট কেলেঙ্কারিতে শেষ পর্যন্ত ফেঁসে যাচ্ছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ। গত ১২ এবং ১৩ আগস্ট দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে।

১৩ আগস্ট তাঁকে সুনির্দিষ্টভাবে রিজেন্ট কেলেঙ্কারির ব্যাপারে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। এই জিজ্ঞাসাবাদে অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ দাবি করেন যে, সাবেক সচিব আসাদুল ইসলামের টেলিফোনে মৌখিক নির্দেশে তিনি রিজেন্টের সঙ্গে এই চুক্তি করেছিলেন।

তার এই বক্তব্যের সূত্র ধরে দুদকের তদন্তকারী দল সাবেক স্বাস্থ্য সচিব এবং বর্তমানে পরিকল্পনা কমিশনের সিনিয়র সচিব আসাদুল ইসলামের সঙ্গে তার কার্যালয়ে দেখা করেন। সেই সাক্ষাতে তারা জানতে চান যে, তিনি এই ধরণের নির্দেশ দিয়েছিলেন কিনা। কিন্তু আসাদুল ইসলাম দুদককে স্পষ্টভাবে জানিয়ে দেন যে, এই ধরণের কোন নির্দেশনা তিনি দেননি।

সাবেক সচিব এবং সাবেক মহাপরিচালকের পরস্পরবিরোধী বক্তব্যের প্রেক্ষিতে দুদক নিজস্ব উদ্যোগে এই সম্পর্কে খোঁজখবর নেওয়া শুরু করেছে।

দুদকের একটি দায়িত্বশীল সূত্র বলছে যে, তারা আসাদুল ইসলাম এবং আবুল কালাম আজাদের মোবাইল ফোনের কল রেকর্ড গ্রহণ করেছে এবং তাতে দেখা যাচ্ছে যে দিনের কথা বলা হচ্ছে, রিজেন্ট হাসপাতালের সঙ্গে চুক্তির নির্দেশনা দেওয়ার জন্যে সচিব তাঁকে টেলিফোন করেছিলেন বলে মহাপরিচালক দাবি করছেন ঐদিন সচিবের দপ্তর থেকে, বাসা থেকে কিংবা তার মোবাইল থেকে কোন টেলিফোন সাবেক মহাপরিচালকের মোবাইলে, দপ্তরের বা বাসার টেলিফোনে যায়নি। অর্থাৎ মহাপরিচালক যেদিনের কথা বলছেন সেই দিন সচিব এবং মহাপরিচালকের কোন টেলিফোন আলাপ হয়নি। একইভাবে ঐদিন সচিব এবং মহাপরিচালকের কোন সাক্ষাত হয়েছে কিনা সে ব্যাপারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে যে, সেদিন সচিব এবং মহাপরিচালকের কোন সাক্ষাতও হয়নি। যেদিনের কথা মহাপরিচালক বলছেন সেদিন সচিব তার দাপ্তরিক কাজে ব্যস্ত ছিলেন, মহাপরিচালক সেদিন মন্ত্রীর সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগ করেছেন।

এই তদন্ত করতে গিয়ে দুদক আরো দেখেছে যে, করোনা সংক্রমণের শুরু থেকে রিজেন্ট হাসপাতালের চুক্তি করা পর্যন্ত সময়ে মহাপরিচালক এবং সচিবের কথাবার্তা হয়েছে খুবই কম। এই সময়ে মহাপরিচালকের সঙ্গে বেশি কথা হয়েছে মূলত মন্ত্রীর এবং মন্ত্রীর সঙ্গে প্রতিদিন অন্তত চার-পাঁচবার কথা বলার কল রেকর্ড পাওয়া গেছে। সচিবের সঙ্গে সপ্তাহে একদিন বা দুইদিন কথা হয়েছে।

যদি সাবেক সচিব এই ধরণের মৌখিক নির্দেশ দিতেন তাহলেও তা আমলযোগ্য ছিলো না। কারণ রুলস অব বিজনেস অনুযায়ী ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ যদি কোন নির্দেশ দেন তাহলে তা অবশ্যই লিখিতভাবে দিতে হবে। দুদকে যখন আবুল কালাম আজাদ জিজ্ঞাসাবাদের মুখোমুখি হয়েছিলেন তখন জানতে চাওয়া হয়েছিল যে এই ধরণের লিখিত কোন নির্দেশনা তিনি পেয়েছিলেন কিনা। সেসময় আবুল কালাম আজাদ বলেছেন যে, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের মৌখিক নির্দেশই বাধ্যতামূলক এবং সেটাই আইনসঙ্গত নির্দেশনা।

কিন্তু দুদকের তদন্তকারী কর্মকর্তারা বলছেন যে, মহাপরিচালক হয় এটা না বুঝে অথবা ইচ্ছাকৃতভাবে ভুল ব্যাখ্যা দিয়েছেন। কোন ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কোন মৌখিক নির্দেশই আমলযোগ্য নয় এবং সেটা প্রতিপালনের কোন বাধ্যবাধকতা নেই। প্রশাসনে সবসময় লিখিত নির্দেশনাকে উৎসাহিত করা হয় এবং এই সমস্ত বিষয় বিবেচনা করে দুদক মনে করছে যে, রিজেন্ট হাসপাতালের সঙ্গে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর যে চুক্তি করেছিল সেই চুক্তির দায়দায়িত্ব অবশ্যই সাবেক মহাপরিচালককে নিতে হবে। তিনি অবশ্যই এই দায় থেকে মুক্তি পেতে পারেন না।

তবে দুদকের একটি সূত্র বলছে যে, তাদের আরো কিছু অনুসন্ধান বাকি আছে। এই সমস্ত অনুসন্ধানগুলো চূড়ান্ত হওয়ার পরেই তারা এই সংক্রান্ত চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দেবে।

Unauthorized use or reproduction of The Finance Today content for commercial purposes is strictly prohibited.


Popular Article from FT বাংলা