June 23, 2025, 2:24 am


বিশেষ প্রতিবেদক

Published:
2025-06-22 21:41:57 BdST

সাবেক সিইসি নূরুল হুদার ভয়াবহ পরিণতি


ফ্যাসিস্ট হাসিনার দোসর এ কে এম নুরুল হুদার ভয়াবহ পরিণতি ঘটেছে। এই লজ্জাজনক পরিস্থিতি থেকে উদ্ধার করে নূরুল হুদাকে গ্রেফতার করেছে উত্তরা পশ্চিম থানা পুলিশ।

রোববার (২২ জুন) সন্ধ্যায় উত্তরায় তাকে জনগণ আটকিয়ে জুতাপেটা করে। পরে হুদাকে জুতার মালা পরিয়ে রাস্তায় ঘুরানো হয়। খবর পেয়ে পুলিশ তাকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে।

উত্তরা পশ্চিম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাফিজুর রহমান আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, পুলিশ যাওয়ার আগেই উত্তেজিত জনতা তাকে জুতার মালা গলায় পরিয়ে রাস্তায় ঘুরায়। এসময় উৎসুক জনতা শ্লোগানও দেয়।

ডিএমপির উত্তরা বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. মহিদুল ইসলাম বলেন, সাবেক সিইসিকে নিরাপত্তার জন্য হেফাজতে নিয়েছি। তবে মামলা দেখে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এদিকে নুরুল হুদাকে জুতার মালা পড়ানোর একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। ১৪ সেকেন্ডের ওই ভিডিওতে দেখা যায়, লুঙ্গি ও সাদা গোল গলার গেঞ্জি, চোখে চশমা পরিহিত নুরুল হুদার গলায় দড়ি দিয়ে বাঁধা এক জোড়া কালো জুতা। এই সময় একজনকে বলতে শোনা যায়, ‘ও যে স্বৈরাচার সৃষ্টি করছে এটা ওর উপহার। ও আর স্বৈরাচার সৃষ্টি করতে পারবে না।’

স্বেচ্ছাসেবক দলের সাংগঠনিক সম্পাদক নাজমুল হাসান জানান, উত্তরার একটি বাসায় নুরুল হুদা পালিয়ে ছিলেন। এই খবর পেয়ে উত্তরার স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতাকর্মীরা এবং এলাকার জনগণ নুরুল হুদাকে বাসা থেকে ধরে এনে জুতার মালা পরিয়ে এলাকায় ঘুরায়। তারপর তাকে উত্তরা পশ্চিম থানায় সোপর্দ করা হয়েছে।

এদিকে অনিয়ম-কারচুপির অভিযোগে গতকাল সাবেক তিন প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ(সিইসি) ২৪ জনকে আসামি করে মামলা করে বিএনপি। আওয়ামী লীগের সময়ে দশম, একাদশ ও দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন পরিচালনার দায়িত্বে থাকা সাবেক তিন প্রধান নির্বাচন কমিশনার হলেন, কাজী রকিব উদ্দীন আহমদ, কে এম নূরুল হুদা এবং কাজী হাবিবুল আউয়াল।

রোববার সকালে রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানায় এই মামলা দায়ের করেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ। এর আগে তিনটি আলোচিত জাতীয় নির্বাচনে দায়িত্ব পালনকারী প্রধান নির্বাচন কমিশনারদের বিরুদ্ধে আইনগত পদক্ষেপ নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছিল বিএনপি। এই বিষয়ে নির্বাচন কমিশন বরাবর একটি চিঠিও দেয় দলটি।

বিএনপি জানায়, ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচন ছিল বিতর্কিত ও ভোটারবিহীন। এসব নির্বাচনে দায়িত্বে থাকা প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও কমিশনারদের বিরুদ্ধে তারা আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে চায়।

উল্লেখ্য, ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বরের একাদশ জাতীয় নির্বাচনে বিএনপি অংশ নিলেও ব্যাপক কারচুপির অভিযোগ উঠে। অধিকাংশ ভোট আগের রাতে হয়ে যাওয়ার অভিযোগের মধ্যে বিরোধীরা মাত্র সাতটি আসনে জয় পায়। সে নির্বাচনের নাম হয় ‘নিশিরাতের নির্বাচন’। ওই নির্বাচনে সিইসি ছিলেন এ কে এম নুরুল হুদা।

উত্তরার সাধারণ মানুষ জানান, এটি একটি বড়ো ধরনের শিক্ষনীয় বিষয়। পরবর্তীতে যারাই এসব পদে থাকবেন তারা কারো পক্ষ নিতে শতবার চিন্তা করবেন। নূরুল হুদা দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবেন।

রাসেল নামে এক ব্যক্তির ভাষ্যমতে, তিনি অপরাধ করলে তাকে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনা হোক। কিন্তু এভাবে জুতার মালা গলায় পরিয়ে একজন মানুষকে রাস্তায় ঘুরানো এটা দৃষ্টিকটু ও আইন বিরোধী। এইসব কর্মকাণ্ড আপনাদেরকে বাহবা দিবে না বরং বিএনপি নামক দলকে আপনারা হালকা করছেন।

ইসমাইল নামের এক ব্যক্তি তার ফেইসবুক স্ট্যাটাসে বলেন, অবশ্যই কে এম নূরুল হুদা একজন অপরাধী। তাকে আইনের হাতে দিয়ে দেন আইনগতভাবে তার বিচার হোক। এদের অপরাধের বিচার হোক সকল মানুষ সেটাই চায়। শুভ চিন্তায় জাগ্রত হোক সকল রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের বিবেক আপাতত এটাই কামনা করি।

Unauthorized use or reproduction of The Finance Today content for commercial purposes is strictly prohibited.