August 9, 2025, 3:21 pm


শাহীন আবদুল বারী

Published:
2025-08-09 10:59:36 BdST

ত্রয়োদশ নির্বাচনে টাঙ্গাইল-৪ এর সম্ভাব্য প্রার্থীডাঃ শাহ আলম তালুকদার ক্লিন ইমেজের প্রতিচ্ছবি


প্রধান উপদেষ্টা ডক্টর মোহাম্মদ ইউনূসের ঘোষণা অনুযায়ী আগামী বছরের ১২ ফেব্রুয়ারি ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। আগামী নির্বাচনে ক্লিন ইমেজের প্রার্থী খুঁজতে জরিপ হচ্ছে। প্রার্থীদের পূর্ণাঙ্গ বায়োডাটা সংগ্রহ করছে সরকারের বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা। লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য হচ্ছে, ন্যায়-নিষ্ঠাবান, সৎ-আদর্শবান ব্যাক্তি, যিনি সর্বস্তরের মানুষের কাছে ক্লিন ইমেজ হিসেবে পরিচিত তাকেই মনোনয়ন দিবে রাজনৈতিক দলগুলো। কোন বিতর্কিত নেতাকে মনোনয়ন দেয়া হবেনা বলে স্পষ্ট ঘোষণা দিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। স্বাধীনতা উত্তর দেশীয় ও বিদেশীয় চক্রান্তের কারণে দেশ কাঙ্খিত অর্জনে পৌছতে পারেনি এবং জনগণের আশা আকাক্ষার যথার্থ প্রতিফলন ঘটেনি। স্বাধীনতার ৫৩ বছরেও দেশীয় ও বিদেশীয় চক্রান্ত এখনো বিদ্যমান। এই রাহুগ্রাস থেকে উত্তরনের জন্য সবাইকে একসাথে কাধে কাধ মিলিয়ে কাজ করতে হবে।

স্বৈরাচার এরশাদ বিরোধী আন্দোলনে, নব্য স্বৈরাচার হাসিনা সরকারের বিরুদ্ধে সর্বোপরী বৈষম্য বিরোধী ছাত্র জনতার আন্দোলনে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল সহ অন্যান্য বিরোধী দলের ভুমিকা প্রশংসনীয়। বিএনপি দেশের বৃহত্তম এবং সবচেয়ে জনসমর্থিত দল। কাজেই বিএনপির কাছে দেশের আপামর জনসাধারণের চাওয়া পাওয়াও বেশি। তাই বিএনপিকে অনুষ্ঠিতব্য ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মনোনয়নে বিচক্ষণতার সাক্ষর রাখতে হবে।

বিএনপি এবার এমপি প্রার্থীদেরকে মনোনয়ন পত্র দেয়ার আগে তাদের সম্পর্কে যাচাই-বাছাইয়ে চুলচেড়া বিশ্লেষণ করতে হবে। টাঙ্গাইল-৪ কালিহাতি আসনও এক্ষেত্রে তার ব্যতিক্রম নয়। কালিহাতিবাসীর প্রানের দাবী বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান চুলচেড়া বিশ্লেষণ করে সৎ, যোগ্য, দুর্বৃত্তপরায়নমুক্ত ও সবচেয়ে জনসমর্থিত ব্যক্তিকে বিএনপি থেকে মনোনয়ন দিবেন।

বিএনপির করণীয় ঠিক করতে অনেক বেশি উদার দৃষ্টিভঙ্গি থেকে বাস্তব ভিত্তিতে উপলব্ধি করতে হবে বলে কালিহাতির রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত রাজনৈতিক নেতারা মনে করেন।

রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ বলেন, দীর্ঘ ১৭ বছর কালিহাতি আসনটি আওয়ামী লীগের দখলে ছিলো। বিএনপি নেতাকর্মীরা কেউ সুখে শান্তিতে বসবাস করতে পারেনি। সমৃদ্ধ স্বনির্ভর ও দুর্বৃত্তপরায়ণমুক্ত কালিহাতী গড়ার লক্ষ্যে সৎ ও ক্লিন ইমেজের মানুষ অধ্যাপক ডা. মো: শাহ আলম তালুকদারকে এমপি পদে মনোনয়ন দিলে বিএনপি এই আসনটি খুব সহজেই ফিরে পাবে। খ্যাতিমান এই চিকিৎসক সাংগঠনিক কোন পদে না থেকেও দলকে সুসংগঠিত করে রেখেছেন। করোনা কালীন সময়ে তিনি জীবন বাজি রেখে মানুষের ঘরে ঘরে চিকিৎসা সেবা এবং গরীব অসহায় মানুষের পাশে দাড়িয়েছেন। বিএনপিকে মনে রাখতে হবে এই আসনটি আওয়ামী লীগের ঘাটি। তারা নির্বাচনে আসতে না পারলেও স্বতন্ত্র কাউকে প্রার্থী করে আসনটি ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টা করবে। আওয়ামী লীগের ঘাঁটি হিসাবে পরিচিত থাকলেও দীর্ঘদিন ধরে এই আসনের মানুষের সেবা করে আসছেন বিএনপি নেতা অধ্যাপক ডাক্তার মোঃ শাহ আলম তালুকদার। তিনি দীর্ঘ সময়কাল ধরে দলের নেতাকর্মীদের বিপদে আপদে পাশে আছেন। দলের নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষের মণিকোঠায় স্থান করে নিয়েছেন।

টাংগাইল-৪ কালিহাতিতে সম্ভাব্য প্রার্থীরা হলেন, অধ্যাপক ডা. মো: শাহ আলম তালুকদার, তিনি ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজের ছাত্রদলের প্রতিষ্ঠাকালীন সক্রিয় সদস্য, আজীবন সদস্য ড্যাব ও জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশন, সাবেক উপদেষ্টা, ড্যাব, ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ শাখা।

বেনজীর আহমেদ টিটোঃ বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক (ঢাকা বিভাগ)। লুৎফর রহমান মতিনঃ ২০০৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী ছিলেন। তিনি জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য।

ইঞ্জিনিয়ার আঃ হালিম মিয়াঃ ২০১৪ সালে বিএনপিতে যোগ দেন। ইতিপূর্বে তিনি জাসদ (শাজাহান সিরাজ) করতেন। তিনি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের সহ সভাপতি।

শুকুর মাহমুদঃ সাবেক জাসদ নেতা, সাবেক আহবায়ক- কালিহাতী উপজেলা বিএনপি। ইঞ্জিনিয়ার বাদুলুর রহমানঃ সভাপতি, বিএনপি, মালয়েশিয়া শাখা।
এ,কে এম আ: আউয়ালঃ সাবেক সভাপতি,জিয়া পরিষদ,টাংগাইল জেলা।

টাঙ্গাইল-৪ কালিহাতি আসনে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের অতীত রেকর্ডঃ ১৯৭৩ সালে আব্দুল লতিফ সিদ্দিকী - আওয়ামী লীগ, ১৯৭৯- শাজাহান সিরাজ- জাসদ, ১৯৮৬-লায়লা সিদ্দিকী -সতন্ত্র,১৯৮৮- শাজাহান সিরাজ- জাসদ (শাজাহান সিরাজের দল), ১৯৯১- শাজাহান সিরাজ(শাজাহান সিরাজের দল),১৯৯৬ এর ১৫ ই ফেব্রুয়ারী নির্বাচনে - শাজাহান সিরাজ-বিএনপি ১৯৯৬,জুন - লতিফ সিদ্দিকী- আওয়ামী লীগ ২০০১- শাজাহান সিরাজ- বিএনপি। ২০০৮- আব্দুল লতিফ সিদ্দিকী -আওয়ামী লীগ,২০১৮-সোহেল হাজারী- আওয়ামী লীগ। উল্লেখ্য ১৯৮৬,১৯৮৮,২০১৪ ও ২০২৪ সালের নির্বাচনে বিএনপি অংশ গ্রহন করেনি।

কালিহাতি উপজেলায় ২টি পৌরসভা ও ১৩ টি ইউনিয়ন রয়েছে। পৌরসভা দুটি কালিহাতি ও এলেঙ্গা। ১৩টি ইউনিয়ন -দুর্গাপুর,দশকিয়া, গোহালিয়াবাড়ি, সল্লা, নারান্দিয়া, বাংড়া, সহদেবপুর,কোকডোহরা, পাইকরা, বল্লা, নাগবাড়ি, বীর বাসিন্দা ও পারখী। সর্বমোট ভোটার সংখ্যা আছে প্রায় তিন লাখ ৮০ হাজার। অধিকাংশ এলাকায় হতদরিদ্র ও মধ্যবিত্ত পরিবারের বসবাস। তাদের সাথে সর্বোপরি যোগাযোগ রেখেছেন ডাঃ শাহ আলম তালুকদার।

কালিহাতির বিভিন্ন শ্রেণির পেশার মানুষের সাথে কথা বলে জানা যায়, মানবতার ফেরিওয়ালা অধ্যাপক ডা. মোঃ শাহ আলম তালুকদার ইতোমধ্যে সর্বস্তরের মানুষের হৃদয়ের স্পন্দনে জায়গা করে নিয়েছেন। তিনি সমৃদ্ধ, স্বনির্ভর ও দুর্বৃত্তপরায়নমুক্ত কালিহাতি গড়ার লক্ষ্যে আলোকিত হয়ে উঠছেন। চায়ের স্টলে চা পানে ৮০ বছরের এক মুরুব্বি বলেন, ১৯৭৭ সালের শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের রেফারেন্ডাম ভোট থেকে শুরু করে পরবর্তীতে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী প্রতিষ্ঠালগ্ন হতে দলের জন্য নিরলস ভাবে কাজ করে যাচ্ছেন শাহ আলম তালুকদার। চাচা মরহুম নুরুল আলম তালুকদারের(প্রতিষ্ঠাতা সিনিয়র সহ সভাপতি, টাংগাইল জেলা বিএনপি ও প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি, কালিহাতি উপজেলা বিএনপি) হাত ধরেই তার রাজনৈতিক পদচারণা শুরু। ছাত্রজীবন থেকে শুরু করে অদ্যাবধি শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের নীতি ও আদর্শে বিশ্বাসী। বিগত স্বৈরাচার সরকারের আমলে তাকে এবং তার পরিবারকে নাজেহালের শিকার হতে হয়েছে। স্বৈরাচার সরকারের আমলে পুরো আন্দোলনের সময় নিহত, আহত, জেল, জুলুম, মামলা, হামলায় দলের সমর্থিতদের পাশে দাঁড়িয়েছেন। তাদের পরিবারের সার্বক্ষণিক খোঁজ খবর রেখেছেন।বিগত ৩৪ বছর যাবত প্রতি সপ্তাহে নিজ এলাকায় ফ্রি ও স্বল্পমুল্যে চিকিৎসা প্রদান এবং দুস্থ মানুষের পাশে থেকে নিরবে নিভৃতে সেবা করে যাচ্ছেন। সেবা প্রদানে অনেকের চাকরির ব্যবস্থাও করে দিয়েছেন নন্দিত এই নেতা।

বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশি ডাঃ মোঃ শাহ আলম তালুকদার এ প্রতিবেদককে বলেন, আমার পরিচিতি এবং রাজনৈতিক পদচারণায় আমি দাবী করতে পারি যে, আমি বিএনপির একজন নিবেদিত কর্মী। ভৌগলিক দিক থেকে কালিহাতী উপজেলা প্রায় ২০ টিরও অধিক জেলার প্রবেশদার। দেশ ও দলের ক্রান্তিলগ্নে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের আদর্শের সৈনিক হয়ে সেবাব্রত মন নিয়ে টাংগাইল-৪ কালিহাতি আসনে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী আমি। কালিহাতি উপজেলায় সাবেক রাষ্ট্রপতি, বিচারপতি, স্পীকার, প্রথিতযশা রাজনীতিবিদ, ভাষা সৈনিক, বিশিষ্ট চিকিৎসক ও বিশিষ্ট শিক্ষানুরাগী,সরকারি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার বাসস্থান। কাজেই এই আসনটি অনেক গুরুত্ব বহন করে। এই আসনে শিক্ষিত, মার্জিত,নিষ্ঠাবান, ন্যায়পরায়ণ, দূর্বৃত্তপরায়নমুক্ত ও অধিক জনসমর্থিত ব্যক্তিকে বিএনপি সার্বিক বিবেচনায় আমাকে মনোনীত করলে আমি দলকে এই আসনটি উপহার দিতে পারবো ইনশাআল্লাহ।

ডা. শাহ আলম তালুকদার আরও বলেন, তারুণ্যের গর্ব বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ঘোষিত রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের ৩১ দফা বাস্তবায়ন বর্তমান প্রেক্ষাপটে দেশ তথা দলের ক্রান্তিলগ্নে সমোয়পোযোগী ও যুগান্তকারী ঘোষণা। এটা শুধুমাত্র কোন দল, ব্যক্তি বা কোন গোষ্ঠীর মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। এই ঘোষণার বাস্তবায়ন হলে বহুল আকাঙ্খীত সকল জনগোষ্ঠীর চাওয়া পাওয়ার প্রতিফলন ঘটবে। জনসাধারণের মৌলিক চাহিদা অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও পরিবেশ বান্ধব সমাজ ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা হবে। ছাত্র সমাজ, যুব সমাজ, নারী সমাজ,পেশাজীবি, প্রবাসী এবং সর্বোপরী আপামর জনসাধারণের চাহিদা মেটানোর সদিচ্ছা এবং তা বাস্তবায়নে আন্তরিক ভূমিকা রাখাই হউক ৩১ দফা বাস্তবায়নের প্রতিশ্রুতি। নবীন প্রবীনের সমন্বয়ে গড়ে উঠুক একটি সমৃদ্ধ,স্বনির্ভর ও দূর্বৃত্তপরায়নমুক্ত বাংলাদেশ।

অধ্যাপক ডাঃ মোঃ শাহ আলম তালুকদার ১৯৫৯ সালের ৫ আগস্ট টাংগাইল জেলার কালিহাতি উপজেলার পারখী ইউনিয়নের আমজানী গ্রামের এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম ও বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক পরিবারে জন্ম গ্রহণ করেন।

Unauthorized use or reproduction of The Finance Today content for commercial purposes is strictly prohibited.