March 28, 2024, 2:31 pm


SAM

Published:
2019-09-29 05:05:22 BdST

অর্থনীতিতে আবাসন খাতের অবদান বাড়ছে


এফটি বাংলা

যে পরিবেশেই থাকুক না কেন, দেশে সাধারণ মানুষের আয়ের ৫০ ভাগ যাচ্ছে বাড়ি ভাড়া দিতে। বাসার আকার যত বড়ো ভাড়া তুলনামূলক তত কম। এছাড়া ছোটো বাসার ভাড়া গুনতে হচ্ছে বেশি। সেইসঙ্গে বস্তিতে যারা থাকছেন তাদের আবাসিক সুযোগ-সুবিধা কম থাকলেও ভাড়া দিতে হচ্ছে তুলনামূলক বেশি। সবমিলিয়ে আয়ের ৫০ ভাগ চলে যাচ্ছে বাড়ি ভাড়া দিতেই। সারাদেশে নিজের বাড়ি আছে ৩ কোটি ২৪ লাখ ৬৯ হাজার পরিবারের। ভাড়া বাড়িতে থাকেন ৪৬ লাখ ২০ হাজার। ভাড়া ছাড়াই বাড়িতে বসবাস করেন সাড়ে ৬ লাখ পরিবার।

সম্প্রতি এমন তথ্যই উঠে এসেছে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) এক জরিপে। ‘সার্ভে অন ওকুপেইড রেসিডেন্সিয়াল হাউজেজ অ্যান্ড রিয়েল এস্টেট সারভাইস ২০১৮’ শীর্ষক প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়েছে। মূলত জাতীয় আয়ে গৃহায়ন খাত ও এই খাতে সংশ্লিষ্ট উপখাতের অর্থনৈতিক অবদান কতটুকু সে বিষয়টি নিয়েই এই প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়েছে।

জরিপ থেকে তৈরি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশের মোট বাড়ির মধ্যে ৮৫ দশমিক ৮২ শতাংশ পরিবারের নিজের বাড়ি আছে। ভাড়া বাড়িতে থাকেন ১২ দশমিক ২১ শতাংশ পরিবার ও ভাড়া ছাড়াই বাড়িতে থাকেন ১ দশমিক ৭১ শতাংশ। এছাড়া অন্যান্যভাবে বাড়িতে থাকেন এক লাখ পরিবার। সবমিলিয়ে মোট দেশজ উৎপাদনে (জিডিপি) আবাসন খাতের অবদান এখন ৭ দশমিক ৭৫ শতাংশ।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশে বহুতল ভবনের সংখ্যা ১৮ লাখ ৫০ হাজার (পাঁচ তলার ওপরে)। পাঁচ তলার নিচে ৩৭ লাখ ৯০ হাজার। সেমিপাকা এক কোটি ১৮ লাখ ৬০ হাজার। কাঁচা ২ কোটি ৯ হাজার এবং ঝুপড়ি ২ লাখ ৫০ হাজার। বসবাসের ঘরের গড় আয়তন ৪২৫ বর্গফুট।

আবাসন খাতে ২০১৫-১৬ অর্থবছরে ভাড়া বাবদ আয় ছিল ৮১ হাজার ২৮৬ কোটি টাকা। যা পরের ২০১৬-১৭ অর্থবছর বেড়ে দাঁড়ায় ৮৯ হাজার ৩৭৪ কোটি টাকা। এক বছরে মূল্য সংযোজন ৭০ হাজার ২০৮ কোটি টাকা থেকে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭৫ হাজার ৯৭২ কোটি টাকা। এই হিসেবে বাজার মূল্য প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৮ দশমিক ২১ শতাংশ।

এই খাতে নিয়োজিত শ্রম পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করে বলা হয়েছে, আবাসন খাতে ৫ লাখ ৩৯ হাজার ৪১৫ জন কাজে নিয়োজিত আছেন। শ্রমিকদের ৩১৩ কোটি ৯০ লাখ টাকা বেতন হিসেবে ও ৫৩৪ কোটি টাকা অন্যান্য পাওনা বাবদ পরিশোধ করা হয়েছে। দেশে মোট ৫৩ লাখ ২০ হাজার বাণিজ্যিক ভবন রয়েছে, এসব ভবনে ৩১ দশমিক ২১ ভাগ মালিক নিজেই ব্যবহার করে থাকেন। পজিশন বিক্রি ২ দশমিক ১২ শতাংশ ভবনে। আর ভাড়া দেওয়া হয়ে থাকে ৬৬ দশমিক ৬৭ শতাংশ ভবন।

প্রতিবেদনে দেখা যায়, অনাবাসিক ভবনে ২০১৫-১৬ অর্থবছরে ৪৮ হাজার ৮৫৫ কোটি টাকা ভাড়া বাবদ আয় হয়েছে যা পরের বছর দাঁড়ায় ৫৪ হাজার ৩৭৯ কোটি টাকা। সংস্কার ব্যয় বাদে এক হাতে ২০১৫-১৬ অর্থবছরে ৪৪ হাজার ৯৪৮ কোটি টাকা মূল্য সংযোজন হয়েছে। ১১ দশমিক ২০ শতাংশ বেড়ে পরের অর্থবছরে এর আকার দাঁড়ায় ৪৯ হাজার ৯৮১ কোটি টাকায়।

এদিকে দেশে নির্মাণ খাতে ৩ হাজার ১৩২ প্রতিষ্ঠান রয়েছে বলে জরিপে উঠে এসেছে। যার ৩৪ দশমিক ২৯ শতাংশ রিহ্যাব ও ৯ দশমিক ৩৯ শতাংশ বাংলাদেশ ল্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের (বিএলডিএ) সদস্য। নির্মাণ খাতে মোট এক লাখ ৭২ হাজার ৩৯২ শ্রমিক কর্মরত রয়েছে। মোট উৎপাদন ২০১৫-১৬ অর্থবছরে ছিল ১৬ হাজার ৯৯৪ কোটি টাকা, যা পরের বছর দাঁড়ায় ১৮ হাজার ৭৫৬ কোটি টাকা। একই সময়ে মূল্য সংযোজন ১৪ হাজার ১৫৫ কোটি টাকা থেকে ১০ দশমিক ৩৭ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৫ হাজার ৬২৩ কোটি টাকায়।

আবাসিক, বাণিজ্যিক ও নির্মাণ মিলিয়ে ৩ উপখাতে ২০১৬-১৭ অর্থবছরে এক লাখ ৪১ হাজার ৫৭৬ কোটি ৫০ লাখ টাকা মূল্য সংযোজন হয়েছে। আগের অর্থবছরে এর পরিমাণ ছিল এক লাখ ২৯ হাজার ৩১১ কোটি ১০ লাখ টাকা। এক বছরে এ খাতে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৯ দশমিক ৪৯ শতাংশ।

Unauthorized use or reproduction of The Finance Today content for commercial purposes is strictly prohibited.


Popular Article from FT বাংলা