April 26, 2024, 10:37 am


নিজস্ব প্রতিবেদক

Published:
2022-05-30 02:29:17 BdST

ঢাকা গনপূর্ত বিভাগ-১নির্বাহী প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে মেরামতের নামে কোটি টাকার অনিয়মের অভিযোগ


ঢাকা গনপূর্ত বিভাগ-১ এর নির্বাহী প্রকৌশলী রাজিবুল ইসলামের বিরুদ্ধে সরকারি স্থাপনা মেরামত খাতের কয়েক কোটি টাকার অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে।

ঢাকা গনপূর্ত বিভাগ-১ এর অধীনে রাজধানীর কাকরাইলে জাজেস কমপ্লেক্স বাজার এবং বেইলি রোডের স্টাফ কোয়ার্টার মেরামতে ভুয়া বাজেট প্রস্তাব, কাজ করতে বিলম্ব হওয়ার সুযোগে নিজেদের উদ্যোগে কাজ সম্পন্ন করা ও জুন ক্লোজিং এর আগে তড়িঘড়ি করে অতি নিম্নমানের কাজ করার অভিযোগ এসেছে। 

চলতি অর্থ বছর ২০২১-২০২২ এ সরকারি সকল স্থাপনা মেরামত বা বার্ষিক ক্রয় পরিকল্পনা খাতে মোট বরাদ্দ আটশ দশ কোটি টাকা। আবাসিক ভবন মেরামত সংক্রান্ত ৫ হাজার ৯১২টি কাজের অনুকূলে ৪০৫ কোটি এবং অনাবাসিক ভবন (অফিস-আদালত) মেরামত সংক্রান্ত ৩৬ হাজার ১৭৪টি কাজের অনুকূলে ৪০৫ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয় সরকার।

উল্লেখ্য, রাজধানী ঢাকায় সরকারি সকল স্থাপনা মেরামতের দায়িত্বে রয়েছেন ২৫ জন নির্বাহী প্রকৌশলী। ঢাকার কাকরাইলে জাজেস কমপ্লেক্স, বেইলি রোডের স্টাফ কোয়ার্টার ও রাজারবাগে পুলিশ স্টাফ কোয়ার্টার মেরামতের দায়িত্ব ঢাকা গনপূর্ত বিভাগ-১ এর। চলতি অর্থ বছরে এই বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী রাজিবুল ইসলাম ১৫০টি মেরামত কাজের প্রস্তাবের বিপরীতে বরাদ্দ পান ১০ কোটি টাকা।

রাজিবুল ইসলাম তার অধীনে থাকা কাজের বিপরীতে অর্থ খরচে দেখিয়েছেন নানান ক্যারিশমা। কোথাও কাজের প্রস্তাবনা দিয়ে দীর্ঘদিন সময় লাগায় ভবনের বাসিন্দারা সম্মিলিতভাবে নিজেদের উদ্যোগে ছোট ও মাঝারি ধরনের অনেকগুলো কাজ সম্পন্ন করে ফেলেছেন। আবার কোন কোন স্থানে কাজের প্রস্তাবনা থাকলেও স্পটে ওই ধরনের কোন মেরামত কাজের প্রয়োজন হয়নি বা অস্তিত্বই নেই।

কাকরাইলে জাজেস কমপ্লেক্স ভবনে তেমন কোন মেরামতের কাজ না থাকলেও এখানে প্রায় ৫০টি কাজের মধ্যে ১০টির কোন হদিস পাওয়া যায়নি। তারমধ্যে আবার ৩/৪টি কাজ স্থানীয়রা নিজেদের উদ্যোগে সম্পন্ন করে ফেলেছেন আর বাকি গুলোর কাজ তড়িঘড়ি করে সম্পন্ন করায় ব্যস্ত। 

অন্যদিকে বেইলি রোডে সরকারি স্টাফ কোয়ার্টারের ভবন মেরামত কাজের ক্ষেত্রেও একই ঘটনা ঘটেছে। এখানেও ৫/৬টি কাজের কোন অস্তিত্ব খুজে পাওয়া যায়নি। আর ২/৩টি কাজ ভবনের বাসিন্দারা নিজেদের উদ্যোগে শেষ করে ফেলেছেন।

৩০ জুনের মধ্যে বিল করতে হবে বিধায় সমস্ত বছর বসে থেকে এখন তড়িঘড়ি করে যেনতেনভাবে কাজ করানো হচ্ছে। যে কাজগুলোর কোন অস্তিত্ব খুজে পাওয়া যায়নি এবং যে কাজগুলো স্থানীয়রা নিজেরাই সম্পন্ন করে ফেলেছেন সেই কাজগুলোর বিপরীতে প্রায় আড়াই কোটি টাকা বরাদ্দ আছে। এই অর্থ ভুয়া বিল ভাউচারে নিয়ে আত্মসাৎ করার সমস্ত প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে।

ঢাকা গনপূর্ত বিভাগ-১ গত অর্থ বছরেও (২০২০-২০২১) প্রায় সমপরিমাণ অর্থ বরাদ্দ পায়। ঐ বছর করোনাকালীন সময় ও কার্যাদেশ দেখিয়ে জায়েজ করা হয়। আবার আগামী অর্থ বছরের কাজের প্রস্তাবনাও প্রায় সম্পন্ন। আগামী অর্থ বছরে কাজের ও টাকার প্রস্তাব চলতি বছরের চেয়েও বেশি বলে গুঞ্জন রয়েছে।

সম্প্রতি এফটি টীম সরেজমিনে বেইলি রোড এবং কাকরাইলে জাজেস কমপ্লেক্স পরিদর্শনে যেয়ে উল্লেখিত তথ্যের সত্যতা খুজে পায়। সেখানে যেয়ে দেখা যায়, চলমান কাজগুলো অতি নিম্নমানের হচ্ছে।

এই বিষয়ে বেইলি রোডে আবাসিক ভবনের কয়েকজনের কাছে জানতে চাইলে নাম প্রকাশ না করার শর্তে তারা এফটি টীমকে বলেন, 'কয়েকটি কাজ আমরা নিজেদের টাকায় সম্পন্ন করতে বাধ্য হয়েছি। কারন গনপূর্তকে বার বার বলেও কোন কাজ হয়নি। তারা কাজ করতে গড়িমসি করে।'

অন্যদিকে চলমান কাজ নিম্নমানের বিষয়ে তারা বলেন, 'না হওয়ার চেয়ে কিছু তো হচ্ছে। তাই আমরা মেনে নিতে বাধ্য হচ্ছি।'

এই বিষয়ে জানতে  ঢাকা গনপূর্ত বিভাগ-১ এর নির্বাহী প্রকৌশলী রাজিবুল ইসলামের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি এফটি টীমকে বলেন, 'বর্তমানে সরকারি সকল কাজের টেন্ডার প্রক্রিয়া ই-জিপির মাধ্যমে সম্পন্ন করায় এখানে অনিয়মের কোন সুযোগ নেই।'

এই বিষয়ে বিস্তারিত জানতে চাইলে সরাসরি অফিসে এসে দেখা করার কথা বলে তিনি ফোন কেটে দেন।

Unauthorized use or reproduction of The Finance Today content for commercial purposes is strictly prohibited.


Popular Article from FT বাংলা