July 27, 2024, 11:15 am


বিশেষ প্রতিবেদক

Published:
2023-11-30 18:28:15 BdST

আবার মার্কিন আতঙ্ক: বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞার শঙ্কা


আজ মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার ডি হাস বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মাসুদ বিন মোমেনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন। মাসুদ বিন মোমেন মার্কিন রাষ্ট্রদূতের সাথে বৈঠকের পরপরই বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে ছুটে যান এবং সেখানে তিনি বাণিজ্য সচিবের সঙ্গে দীর্ঘক্ষণ বৈঠক করেছেন।

শ্রম অধিকার লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞা এবং ভিসা নিষেধাজ্ঞা সহ বিভিন্ন ব্যবস্থা গ্রহণের ঘোষণা দিয়ে গত ১৬ নভেম্বর এক প্রেসিডেনশিয়াল মেমোরেন্ডাম স্মারক জারি করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। বিষয়টি নিয়ে ওয়াশিংটনে বাংলাদেশ দূতাবাস থেকে ২০ নভেম্বর বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠানো হয়। চিঠিতে বাংলাদেশ এই স্মারকের অন্যতম সম্ভাব্য লক্ষ্য হতে পারে বলে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। 

ওয়াশিংটনের বাংলাদেশ দূতাবাসের ওই চিঠির সামগ্রিক প্রেক্ষাপট বিবেচনায় আগামী ৪ ডিসেম্বর করণীয় নির্ধারণে বৈঠক অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। সেই বৈঠকের আগেই মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার ডি হাস বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিবের সঙ্গে বৈঠক করলেন।

এই বৈঠক এমন একটি সময়ে অনুষ্ঠিত হলো যখন দেশ একটি নির্বাচনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। এই নির্বাচন নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন ধরনের পর্যবেক্ষণ আছে, ছিল। আর সেই পর্যবেক্ষণের মধ্যেই নির্বাচন কমিশন একটি নির্বাচন করতে যাচ্ছে যে নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ করছে না।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম শর্ত ছিল, বাংলাদেশে যেন একটি অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এরকম প্রেক্ষাপটে নির্বাচনের আগে শ্রমবিষয়ক মেমোরামের বাংলাদেশ টার্গেট হবে কি না তা নিয়ে নানারকম জল্পনা কল্পনা শুরু হয়েছে। 

কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন যে, নির্বাচনের বিষয়ে ভারতের মধ্যস্থতায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র একটি নমনীয় অবস্থান গ্রহণ করলেও শ্রম অধিকার নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সরব হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

ওয়াশিংটনে বাংলাদেশ দূতাবাসের মিনিস্টার; বাণিজ্য, মো. সেলিম রেজা স্বাক্ষরিত চিঠিতে বলা হয়েছে, স্মারকটির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অর্থাৎ মার্কিন শ্রম অধিকার নীতির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন এবং ভারপ্রাপ্ত শ্রমমন্ত্রী সুনির্দিষ্ট বক্তব্য রাখেন।

ঐ বক্তব্যে তিনি বাংলাদেশের শ্রম অধিকার বিষয়ে এবং গার্মেন্টস শ্রমিক কল্পনা আক্তারের বিষয়টি উল্লেখ করেছেন। এ কারণেই বাংলাদেশ এর টার্গেট হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। 

গত কয়েক মাসে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের পোশাক খাতে রপ্তানি উল্লেখযোগ্য হারে কমেছে। তবে এর সাথে নির্বাচনের সম্পর্ক আছে কিনা সেটি নিয়েও নানামুখী আলাপ আলোচনা চলছে।

তবে সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন যে, নির্বাচনের আগে যদি শ্রম অধিকার নীতি বাংলাদেশের ওপর প্রয়োগ করা হয় তাহলে সেটি সরকারের জন্য একটি বড় ধরনের হুমকি সৃষ্টি করতে পারে। একটি চাপ তৈরি করতে পারে। অনেকেই মনে করছেন যে, বাংলাদেশে যেভাবে নির্বাচন হচ্ছে, এই প্রক্রিয়াটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র পছন্দ করছে না। আর একারণেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এখন অন্য কৌশলে সরকারকে চাপে ফেলতে চাইছে।

তবে কূটনৈতিক মহল মনে করছেন যে, পুরো বিষয়টি বিচ্ছিন্নভাবে দেখার কোনো বিষয় নেই। মার্কিন শ্রম বিষয়ক মেমোরেন্ডাম নাম বা বাংলাদেশে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের দাবি বা মানবাধিকার বিষয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান ইত্যাদি সবই এক সূত্রে গাঁথা। আর এরকম একটি পরিস্থিতি থেকে বেরিয়ে আসার জন্য সরকারকে তার করণীয় নির্ধারণ করতে হবে দ্রুতই।

এখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যে শ্রম অধিকারের কথা বলছেন, সেই শ্রম অধিকার লঙ্ঘনের খাতায় যদি বাংলাদেশকে দেখা হয় তাহলে সেটি নিয়ে বাংলাদেশ একটি বড় ধরনের  ‍হুমকির মধ্যে পড়তে যাচ্ছে বলে অনেকে মনে করছেন।

তবে সরকারের দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলছে যে, তারা পরিস্থিতি সম্পর্কে ওয়াকিবহাল এবং এই ব্যাপারে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য তারা তৎপর।

Unauthorized use or reproduction of The Finance Today content for commercial purposes is strictly prohibited.


Popular Article from FT বাংলা